নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না: মির্জা আব্বাস

তিনি বলেন, যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, আপনারা আর কোনোদিন ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যখন নির্বাচন হবে, সেদিনই বাংলার জনগণ ভোট দিতে পারবে। ইনশাল্লাহ বিএনপি সেদিন সরকার গঠন করবে।

গতকাল সোমবার বিকেলে, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের বাংলাদেশ আজ অদ্ভুত এক দেশে পরিণত হয়েছে। এখানে ৪০ টাকা ডিমের হালি, তেলের দাম ১৮০ টাকা, এক হাজার ২৬০ টাকা গ্যাসের সিলিন্ডার, ৭০ টাকা চাল, ১২০ টাকা ডাল। সবকিছুর দাম বেড়েছে, শুধু বাড়েনি মানুষের দাম। একদিকে মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে দিশেহারা, আর অন্যদিকে সরকারের নেতারা ব্যস্ত লুটপাটে। মফস্বলের ছাত্রলীগ নেতার অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায় দুই হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে, তখনই তাদের নেতাকর্মীরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। ১৯৭৩-৭৪ সালে তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। চারটি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা নিষিদ্ধ করেছিল। কোনো টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দিয়েছিলেন। সেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আজকের আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো তফাৎ নেই।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সময় একটি সুন্দর বাংলাদেশ ছিল। গুম-খুন ছিল না, দ্রব্যমূল্য বাড়েনি। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হতো না। এই প্রধানমন্ত্রীর সময় গুম-খুন হচ্ছে। দেশটাকে লুটপাট করে খাচ্ছে। দেশের মানুষ কথা বলতে পারে না। কথা বললে গুম হয়ে যায়, খুন হয়ে যায়। বিএনপির নেতাকর্মী সবাইকে মামলা দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে দুই কোটি টাকার জন্য সাজা দেওয়া হয়েছে। সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই, দুই কোটি টাকা বেগম জিয়ার অ্যাকাউন্টে ছিল যদি প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে রাজনীতি করবো না। দুই কোটি টাকা আট কোটি টাকা হয়ে গেছে। একটা টাকাও তছরুপ হয়নি। বিএনপির নেত্রীর জনপ্রিয়তা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন রাজত্ব করতে পারবে না। এ কারণে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে।

মির্জা আব্বাস বলেন, মন্ত্রীরা বলছেন, কোনো গুম-খুন নাকি হয়নি। গুম-খুন যদি না-ই করে থাকেন, তাহলে স্যাংশন দেওয়া হলো কেন? গণতন্ত্রকে হত্যার দায়ে, মানুষ খুনের দায়ে, গুমের দায়ে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে। আজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আপনারা চোরের দল, লুটের দল, খুনির দল। পুলিশ ভাইদের বলবো, আপানারা আমাদের মিছিলে হামলা করেন, মিটিংয়ে হামলা করেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে তারা যখন পালাবে- আপনাদের কি সঙ্গে নিয়ে যাবে? সুতরাং সরকারের অন্যায় আদেশ নয়, রাষ্ট্রের নিয়মনীতি মেনে চলুন।