ছাত্রলীগের রাজনীতি না করায় ওয়ালিদ নিহাদ নামে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) জুনিয়র এক শিক্ষার্থী মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রথমে তাকে ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার। তিনি বলেন, ‘নিহাদ এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছে।’
এর আগে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদ্য চালু হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ওয়ালিদ নিহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
তার সহপাঠীদের দাবি, ‘নিহাদকে রোববার দিনগত রাত দেড়টার পর ধরে নিয়ে গিয়ে পিঠে ও মাথায় মারধর করা হয়েছে। এ সময় সে বেশ কয়েকবার বমি করেছে।’
এ নিয়ে দুপুরে নিহাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন তার সহপাঠীরা। এতে নিহাদ লিখেন, ‘সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পলাশ ভাই আমাকে হলে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাট্যকলা বিভাগের হিমেল ভাই আমাকে থাপ্পড় মারেন। আমার বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তুহিন ভাই, ২০১৪-১৫ বর্ষের মুমিন ভাই, ইইই বিভাগের অ্যালেক্স সাব্বির ভাই, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তানভীর ভাইসহ আরও পাঁচ-ছয়জন আমাকে টানা লাথি ঘুষি মারতে থাকেন। একই সঙ্গে ফোকলোর বিভাগের যাযাবর নাঈম (আবু নাঈম আব্দুল্লাহ) ভাইও লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। গলায় ও বুকের ওপর দাঁড়িয়ে অনেক মেরেছেন নাঈম ভাই। আমি কেন রাকিব ভাইয়ের রাজনীতি করি না। আমি নাকি অন্যদেরও রাজনীতি করতে বাধা দিয়েছি, যা ভিত্তিহীন।’
অভিযোগে নিহাদ আরও লিখেছেন, ‘পারিবারিক সমস্যার কারণেই আমার রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি পড়াশোনা নিয়েই থাকতে চাই। কিন্তু আমাকে ক্যাম্পাসে থাকতে হলে নাকি রাজনীতি করতে হবে। এক পর্যায়ে নাট্যকলার হিমেল ভাই আমার হাতে রামদা দিয়ে আমাকে যাযাবর নাঈম ভাইয়ের কাছে রাজনীতি করবো বলে পা ধরে মাফ চাইতে বলেন। এরপর আমার প্রোফাইলে খালেদা জিয়ার ছবি পোস্ট করানো হয়, যা আমি পরে ডিলিট করি। হাতে রামদা দিয়ে জোরপূর্বক বলানো হয়, ২০২৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তারেক জিয়া দেশে ফিরবে। তখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রলীগের কুত্তা থাকতে পারবে না। কোনো শিক্ষকের কাছে বিচার নিয়ে যাবি না। রাকিব ভাই চাইলে ভিসি পরিবর্তন হয়। বেশি কথা বললে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে পারবি না, আবরারের মতো মরবি। এর একটি ভিডিও ধারণ করা হয়।’
এদিকে নিহাদকে মারধরের প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের দরজা আটকে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলটিমেটাম দেন তারা।