আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা জনগণ প্রতারিত হয়েছে: মির্জা ফখরুল

0

আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা জনগণ প্রতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন আসার আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করতে পারেনি। বিধায় জনগণ আশাহত হয়েছে। প্রতারিত হয়ে গান গেয়েছে—আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় চড়তাম না।’

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে কৃষক দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মানিকচাঁদ গ্রামে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী মহল কর্তৃক সেচপাম্প স্থাপনে বাধাদানের প্রতিবাদে নিজের ফসলের মাঠে ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে কৃষক শফিউদ্দিন আত্মহত্যার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল, ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়াবে, বিনা পয়সায় সার দেবে এবং ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। মানুষও ভেবেছিল একটা পরিবর্তন আসবে। তাই সেদিন কিছু মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছিল। কিছু দিন পর তারা টের পেলেন একেবারে ভাঁওতাবাজি।’

তিনি বলেন, ‘সরকার চাল-ডাল-লবণের দাম বাড়াচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই দাঁড়াতে হবে। কিন্তু তার আগে আমার প্রশ্ন, সরকারকে জবাব দিতে হবে, কেন চালের দাম বাড়ছে, তেলের দাম বাড়ছে। কেন? কারণটা কী? কারণ, তোমাদের চুরি, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার দুর্নীতির সঙ্গে রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে জড়িয়ে ফেলেছে। কোনও খাত নেই, যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে না। আজকে বিচার বিভাগকে তারা ধ্বংস করেছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে। আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করার চেষ্টা করছে।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আজকে প্রতিটি মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তারা এই সরকার থেকে মুক্তি চায়। টিভি টকশোতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ একুশের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের যে লক্ষ্য ছিল তা ধ্বংস করে দিয়েছে। কথাটি তথ্যমন্ত্রীর গায়ে খুব লেগেছে। তিনি বলেছেন, এটা নাকি আমরা করেছি, তারা করেনি। জনগণ বিচার করবেন—কারা করেছে।’

এখন আর জবাবদিহি নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওয়াসা পানির দাম বাড়াচ্ছে। তারা বলছে, আমাদের খরচ বেড়ে গেছে। খরচা কীসে বেড়েছে। ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে বেতন দিচ্ছো ৬ লাখ টাকা করে। আর চুরির শেষ নেই। পকেট কাটছে জনগণের। আজকে গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছ। বলছো, কুলাচ্ছে না। কেন কুলাচ্ছে না, কারণ তুমি চুরি করছো। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করে। এমনভাবে চুরি করছে যে এখন সেই বিদ্যুতের দাম বছরে তিন-চারবার করে বাড়ছে।’

ফখরুল বলেন, ‘সার্চ কমিটি গঠন করে জনগণকে বোকা বানানো হচ্ছে। সরকার ইলেকশন ব্যবস্থা ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। কিছু নেই এর মধ্যে। এখন তারা আবার নির্বাচিত হওয়ার জন্য নিজেদের মতো করে ইলেকশন কমিশন গঠন করবে। সেই ইলেকশন কমিশন গঠন করার জন্য তারা আবার একটা সার্চ কমিটি তৈরি করেছে, আইনও তৈরি করেছে। সবকিছু হচ্ছে জনগণকে বোকা বানানোর জন্য।’

তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটি যাদের দিয়ে করেছে, সব তাদের লোক। আজকে তারা নামগুলো পাঠাবে প্রেসিডেন্টের কাছে, যাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। দেখা যাবে যে তারাও হুদার মতো লোক হবে।’

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে আমাদের বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করার উপায় নেই। আমি কৃষক দলকে বলবো, তাদের অসাধারণ ক্ষমতা। আজকে কৃষকদের যদি সংগঠিত করা যায়, তাহলে এই দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে পারবো।’

প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com