সংবিধানের বাইরে কেউ না, সংবিধানের কর্তব্য পালনে সবাই বাধ্য।’
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। প্রয়োজনে খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য আইনি লড়াই করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে জামিন না দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘন। গতকাল মঙ্গলবার ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমিসহ আমরা সবাই আছি তার (খালেদা জিয়া) জামিনের ব্যাপারে। তার জামিনের ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা অবশ্যই অব্যাহত আছে, থাকবে।’ খালেদার জামিনের পক্ষে দাঁড়াবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, ‘অবশ্যই যে কারও প্রয়োজন হলে আমার পেশাগত কাজ, এটা আমি করব।’
সর্বোচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘অবশ্যই আছে। জামিন যতবার আমরা চাইতে পারি। রিভিউর ব্যাপার আছে, রিভিউ ছাড়া ফ্রেশ অ্যাপ্লিকেশন করা যায়।’ খালেদা জিয়াকে জামিন না দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘উনাকে জামিন না দেওয়া অবশ্যই সংবিধান লঙ্ঘন করা। উনার চিকিৎসার ব্যাপারে যেটা আমরা দাবি করছি, সেটা যদি না মেনে নেওয়া হয়, সেটা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল হবে। সংবিধানের বাইরে কেউ না, সংবিধানের কর্তব্য পালনে সবাই বাধ্য।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, সংবাদমাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন, খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতির কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তারা গভীর উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় আশু ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি করেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করতে চাই, খালেদা জিয়ার যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা হলে তার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই বহন করতে হবে।’
পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ষষ্ঠ তলায় চিকিৎসাধীন।
এদিকে বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ড. কামাল অবিলম্বে ধর্ষককে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এর আগে মতিঝিলে তার আইনি চেম্বারে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, সভাপতিম-লীর সদস্য মহসিন রশিদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক সিরাজ মিয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্পধারা একাংশের সভাপতি নূরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ।