ছাত্রলীগের নির্যাতনে ঢাবিতে হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থী
তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলার জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এফ রহমান হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোল্লা তৈমুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে হুমকির মুখে হল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী রোকনুজ্জামান রোকন তাকে নির্যাতন করেন বলে জানিয়েছেন তৈমুর। রোকন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রাধ্যক্ষকে দেওয়া অভিযোগে তৈমুর বলেন, ‘হলের মাঠে সিনিয়র ভাইয়ের সঙ্গে কেন কথা বলেছিস’- এটি জিজ্ঞাসা করে রোকন আমাকে সর্বশক্তি দিয়ে থাপ্পড় দেন। এতে কয়েক ঘণ্টা কানে শুনতে পাইনি এবং তীব্র মাথাব্যথায় ভুগতে থাকি।’
অভিযোগে আরও বলেন, ‘এর পর রোকনুজ্জামান আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানালে তিনি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। একপর্যায়ে আমি ভয় পেয়ে ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হল ছেড়ে ভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি।’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রোকনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন তিনি।
ভুক্তভোগী ও তার সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ তাদের অধীনে গণরুমে ওঠা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘নিয়মিত কৈফিয়ত প্রদান কর্মসূচি- গেস্টরুম’ পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে মূলত ভয়ভীতি দেখিয়ে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করা হয়। সাধারণত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের গেস্টরুম পরিচালনা করেন। গেস্টরুমের অন্যতম নিয়ম হলো- দ্বিতীয় বর্ষ ছাড়া অন্য সিনিয়রদের সঙ্গে সালাম দেওয়া ছাড়া আর কোনো কথা বলা যাবে না। এ নিয়ম ভঙ্গের জন্য নির্যাতন করা হয় তৈমুরকে। তবে তৈমুর জানান, আমি স্বেচ্ছারক্তদাতা সংগঠন বাঁধনে কাজ করি। রক্তের ব্যাপারে ওই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। গেস্টরুমে তার বন্ধুদেরও নিয়মিতই মারধর করা হয় বলে জানান তিনি।