রেমিট্যান্স নির্ভরতায় অর্থনীতিতে ঝুঁকির মাত্রা বাড়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক
রেমিট্যান্স নির্ভরতায় অর্থনীতিতে ঝুঁকির মাত্রা বাড়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। উল্লেখ্য, বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি ও আমদানিতে ঘাটতি অর্থায়নে প্রধান ভূমিকা রাখছে রেমিট্যান্স। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষা ও টাকার প্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও এর রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। সবচেয়ে বড় কথা, রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে আমাদের অর্থনীতির অনেক সূচক সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এককভাবে কোনো কিছুর ওপর বেশিদিন নির্ভর করা ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বহুমুখী উৎসের দিকে নজর দেওয়া উচিত। পাশাপাশি রেমিট্যান্সের অর্থ ভোগবিলাসে ব্যয় না করে তা উৎপাদন খাতে ব্যয় করার পরামর্শও দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। সরকারের উচিত, এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা, যার ফলে দেশে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ায় সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা বেড়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বস্তুত গত ছয় বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে রেমিট্যান্সকে অবলম্বন করে অর্থনীতির অনেক সূচক সামনে এগিয়ে গেলেও দেখা যায়, হঠাৎ করে এটির প্রবাহ কমতে থাকলে তখন অর্থনীতির নানা সূচকে চাপ বৃদ্ধি পায়। অতীতে শ্রীলংকা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করায় বর্তমানে সংকটে পড়েছে। এছাড়া চীন ও কানাডা ২০০৭ সালের বৈশ্বিক মন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মূলত রপ্তানির ওপর অধিকমাত্রায় নির্ভরশীল থাকায়।