বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৫৮ লাখ ছাড়াল
চলমান করোনা মহামারীতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরো কমেছে। একইসাথে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ২৪ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, মেক্সিকো, ভারত, স্পেন ও ফ্রান্স। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ৬০ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৮ লাখ ৭ হাজার।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ হাজার ৬৫৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ছয় শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৮ লাখ ৭ হাজার ৩২২ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১৭ হাজার। এতে মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ৬০ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ১২৮ জন এবং মারা গেছেন ২২৪ জন। করোনা মহামারীর শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার ১৯৬ জন মারা গেছেন।
দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে এই সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৭ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৩১২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৩৯ হাজার ২৭০ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯২২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫৯ জন। অপরদিকে মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার ৫১২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩৬ হাজার ১১১ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৫৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫৫ হাজার ৯৮৮ জন। মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪৮ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ৭ হাজার ২০৮ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭০১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬ জন। এছাড়া মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৮৪৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯১ জনের।
স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৫৫ জন এবং মারা গেছেন ৩৯৩ জন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৬৯৪ জন এবং মারা গেছেন ২৮০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৬০২ জন এবং মারা গেছেন ২৬৪ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৬১ জন এবং মারা গেছেন ৩২৫ জন।
এছাড়া গত একদিনে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫ জন এবং মারা গেছেন ৩১০ জন। করোনা মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৩ লাখ ৭২ হাজার ২৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৪ হাজার ২০৭ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২৬৯ জন এবং মারা গেছেন ১৭৯ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০৩ জন, কানাডায় ১৩১ জন, আর্জেন্টিনায় ২৬৩ জন, গ্রিসে ৯৭ জন, পোল্যান্ডে ২৬২ জন, হাঙ্গেরিতে ৯৯ জন, ইরানে ১৩০ জন, জাপানে ১৫৫ জন, রোমানিয়ায় ১৩৮ জন, চিলিতে ১৬২ জন এবং ভিয়েতনামে ৭৪ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৭৪৩ জন। মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৬২৭ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারী’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।