দূতাবাসগুলোকে রাষ্ট্রের বদলে আ.লীগের প্রচার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে: ফখরুল

0

বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে দলীয়করণ করে জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দূতাবাসগুলোর ব্যয় বহন করা হয় জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। অথচ, নির্লজ্জ ও অপেশাদার উপায়ে সেই প্রতিষ্ঠানকেও দলীয়করণ করে জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজে লাগানো হচ্ছে, মিথ্যাচার ও প্রতারণা করার মাধ্যমে।’

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। ওয়াশিংটন-ব্রাসেলসসহ কয়েকটি দূতাবাসের সাম্প্রতিকালের অপেশাদারি কর্মকান্ডের তথ্য তুলে ধরে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করার চলমান অপততপরতার সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে, বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস ক্যাডার সমন্বয়ে গঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দলীয় ততপরতা। পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষা দেয়াই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দূতাবাসের দায়িত্ব। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ওইসব দূতাবাসের সকল ব্যয় রাষ্ট্র বহন করে। জনগণের ট্রাক্সের টাকায় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন বহন করা হয়।

গত ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগোরি ডব্লিউ মিকসের নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্য ‘বিকৃত’ ব্যাখ্যা দিয়ে ওয়াশিংটন দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, তার (গ্রেগোরি ডব্লিউ মিকস) বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে শুধু সচেতন মানুষের সাথেই প্রতারণা করেনি, ওয়াশিংটন দূতাবাস বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। কারণ আপনারা সকলে জানেন, ইতিমধ্যে কংগ্রেসম্যান মিকস নিজেই গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে নাকচ করে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, তার নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন এফেয়ার্স কমিটির ওয়েবসাইটে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন।

মার্কিন হাউজ অব ফরেন এফেয়ার্স কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে তিনি সুস্পষ্টভাবে র‌্যাব ও তার বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তারদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়ে তিনি বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে আমি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দৃঢ় করা আমি সবসময় সমর্থন করব। আগামী নির্বাচন অবাধ ও তার ‍সুষ্ঠু নিশ্চিতকরণসহ বাংলাদেশের মানাবাধিকার ও গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য কাজ করব।

বেলজিয়াম দূতাবাসের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত একটি বেসরকারি সংবাদ সম্মেলনের সূত্র ধরে সেখানে অবস্থিত দূতা্বাসের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিলো। আপনারা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ভিজিট করলে সেই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি এখনো দেখতে পাবেন। যেখানে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মীর মতো বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যা দূতাবাসকে রাষ্ট্রের বদলে আওয়ামী লীগের প্রচার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রমাণ।

বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি একাডেমিশিয়ান, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীরা যখন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি,নির্বাচনের অনিয়ম, জনগণের ভোটাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সামগ্রিক হতাশাজনক পরিস্থিতি জনগণের সামনে অথবা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে বই অথবা প্রচারপত্র বা আলোচনার উদ্যোগ নেন তখনই এই সরকার তার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর শক্তিকে ব্যবহার করে, তার নিজস্ব বাহিনীকে ব্যবহার করে এসব অপকর্মকে ঢাকার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলসসহ বিভিন্ন দূতাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মকান্ডে আবারো এটাই প্রমাণিত হলো।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী  উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com