‘এই সরকারের নতজানু নীতির কারণে আমরা আজ আক্রান্ত হচ্ছি।
সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতিই ধ্বংস ডেকে আনছে
— সেলিমা রহমান
সরকার আগ্রাসী শক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘এই সরকারের নতজানু নীতির কারণে আমরা আজ আক্রান্ত হচ্ছি। দেশের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে যে এনআরসি আইন পাস করা হয়েছে, এই আইনের মাধ্যমে ভারতের মুসলিম নাগরিকদেরকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মিয়ানমারে আগ্রাসী শক্তির কারণে রোহিঙ্গারা আজ আমাদের দেশে অবস্থান করছে। এখন ভারতের মুসলমানদের বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৭, ২০২০, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ফেলানী হত্যা দিবসে ”আগ্রাসন বিরোধী নাগরিক সমাবেশ” মানববন্ধনে তিনি এসসব কথা বলেন।
সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘তারা শুধু স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। কিন্তু জনগণের কাছে তাদের কোনও জবাবদিহিতা নেই। বাংলাদেশের মাটি থেকে শুরু করে জনগণকে তারা আগ্রাসনের মুখে ফেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ন্যায়ভিত্তিক সমজব্যবস্থার জন্য আমরা কৃষক শ্রমিক জনতা মিলে যুদ্ধ করেছিলাম। এনেছিলাম দেশের স্বাধীনতা। রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু আজকে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি, আমাদের স্বাধীন দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, কথা বলার অধিকার নেই, এমনকি গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যা সমাধান করতে পারেনি সরকার। তিস্তার জন্য উত্তরবঙ্গ হাহাকার করছে, মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে দেশ, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাঠে ফসল ফলানো যাচ্ছে না, কৃষক হাহাকার করছে। কিন্তু আমাদের আগ্রাসী সরকারের এ নিয়ে কোনও মাথা ব্যথা কিংবা প্রতিবাদ নেই। উল্টো সরকার ফেনী নদীর পানি ভারতকে উত্তোলন করার জন্য চুক্তি করে দিয়েছে।’
সেলিমা রহমান বলেন, ‘এই হলো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা। এর কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের যে সরকার রয়েছে তারা জবাবদিহিতামূলক সরকার নয়। এ সরকার সম্পূর্ণ বিনা ভোটের অবৈধ সরকার। এ দেশে তাদের কোনও জায়গা নেই, বাংলাদেশ মানুষ তাদের কোনও দিন ভোট দেবে না। তারা জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমগ্র দেশের জনগণের। এই অবৈধ সরকারকে যদি দমন করতে হয়, তার একমাত্র পথ হচ্ছে রাজপথের আন্দোলন। তাই আজ ফেলানী হত্যা দিবসে আমরা শপথ করি, সমস্ত মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদের ঝাণ্ডা তুলে ধরি। এই প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে এ সরকারের পতন ঘটবে।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এনডিপির সভাপতি কারী আবু তাহের প্রমুখ বক্তব্য দেন।