ফেব্রুয়ারি ৮ — চক্রান্তমূলক মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার চতুর্থ কারাবন্দি দিবস
ফেব্রুয়ারি ৮ — চক্রান্তমূলক মামলায় ফরমায়েশি সাজায় মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করার চতুর্থ কারাবন্দি বার্ষিকী।
২০১৮-এর এই দিনে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী মিথ্যা মামলায় অন্যায় সাজার মাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের গভীর শ্রদ্ধা ও অশেষ ভালোবাসার প্রতীক নিরপরাধ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিনরোডের পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দি করে রাখে।
গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বেগম জিয়া্কে দূরে রেখে বিনাভোটে বিনাবাধায় বন্দুকের নলের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকার জন্যই তাঁকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে দেশি বিদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষকবৃন্দ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহ অভিমত প্রকাশ করেছেন।
এ ধরনের রায়ের পর বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক জামিন পেয়ে থাকলেও, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ওম্যান প্রধানমন্ত্রী ও অসুস্থ একজন সিনিয়র সিটিজেনকে এই ন্যুনতম অধিকারটুকুও দেয়নি জানুয়ারি ৫, ২০১৪ এর ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতা দখলকারীরা। ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮, প্রহসনের নির্বাচনে মধ্যরাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে রাস্ট্র ক্ষমতা আবারও কুক্ষিগত করে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তাদের হিংসার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
গণচাপে অবশেষে মার্চ ২৫, ২০২০, বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয় অবৈধ সরকার।
সুস্থ বেগম খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটে জেলে গেলেও, বের হয়েছেন হুইল চেয়ারে চেপে। বন্দিকালে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। করোনাভাইরাস বিশ্বমহামারির ফলে তাঁর চিকিৎসা ব্যহত হয়।
২০২১-এ তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ হন। এরপর তাঁর লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। চিকিৎকরা তাঁকে বিদেশে অ্যাডভান্সড সেন্টারে চিকিৎসা নেয়ার জরুরি পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার্থে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না ভোট ডাকাত সরকার।
তাঁর পরিবার, আইনজীবী, চিকিৎসক ও দল, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, মানবাধিকার সংগঠন ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার নেতৃবর্গের পক্ষ থেকে বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বার বার তাঁকে মুক্তি দিয়ে তাঁর চিকিৎসার ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হলেও অবৈধ কর্তৃপক্ষ কিছুই করছে না। বিনা চিকিৎসায় কষ্টে ভুগছেন তিনি। তিলে তিলে নিঃশেষ হচ্ছেন এই সংগ্রামী মহান নেত্রী।
বাংলাদেশের অবিচল গণতন্ত্র-সংগ্রামী আপসহীন এই নেত্রীকে বন্দি রেখে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী তাদের ‘দুঃশাসন-দুর্নীতি-সন্ত্রাস’ অব্যাহত রাখছে। ‘গুম-খুন-গ্রেপ্তার-নির্যাতন-মামলা’ এর ওপর ভর করে জনগণের লাখো কোটি টাকা আত্নসাৎ করা এই ব্যাংকডাকাত স্বৈরশাসকগোষ্ঠী বর্বরপন্থায় ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখছে। জনগণের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা তাদের কাছে মূল্যহীন।
বেগম জিয়াই আওয়ামী-অন্ধকারযুগে চোখ ধাঁধানো আলোর ঝড়, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের গ্রেটওয়াল।
যুবক-যুবতী, ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, মজুর, গৃহিনী, পেশাজীবী, রাজনৈতিকর্মী — বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ একইসাথে ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম জিয়ার মুক্তি ও তাঁদের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার দুই লক্ষ্যে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য (Coalition of people) তৈরি করে চলেছে দেশজুড়ে ও দেশে দেশে। স্বৈরশাসনের জগদ্দল মসনদ উপড়ে ফেলে বেগম জিয়া্কে মুক্ত করতে সংহত সংকল্পবদ্ধ এই দেশের পরিশ্রমী গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ । টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সুন্দরবন থেকে সিলেট এক লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৯৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে কোটিকোটি মানুষের মিলিত কণ্ঠস্বর প্রতিনিয়ত ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে —
“…মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই
খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই”