সরকার ক্ষমতালোভের জন্য জনগণের প্রতি অমানবিক অবজ্ঞা করছে: রিজভী

0

যেকোনো মূহুর্তে পতনের সম্ভাবনায় সরকার মরণকামড় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের উগ্র ক্ষমতালোভের জন্য তারা জনগণের প্রতি অমানবিক অবজ্ঞা করছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিবেক, সুচিন্তা, নৈতিকতা ইত্যাদিকে জলাঞ্জলি দিয়ে শাসকগোষ্ঠী এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতা ধরে রাখার উদ্দেশ্যেই সরকার ক্ষমতার আড়ালে ব্যাপক দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তাদের গুম-খুন-বন্দুকযুদ্ধের উন্মাদ-লীলার কারণে বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। যেকোন মূহুর্তে পতনের সম্ভাবনায় তারা মরণকামড় দিচ্ছে।

রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন,’নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ বিনা উস্কানিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এই হামলায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী গুরুতর আহত এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। কোন কারণ ছাড়াই পুলিশের এই হামলা কাপুরুষোচিত ও পূর্ব পরিকল্পিত। বিএনপি’র কর্মসূচিতে পুলিশি হামলা আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর চিরচেনা সংস্কৃতি।

ঘটনার পরে রাত ৮ টার সময় বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব ও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনের বিএনপি থেকে মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী রফিকুল আলম মজনুকে আটক করে পুলিশ।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,’ আজ পুলিশের সহিংস তাণ্ডবের মূল উদ্দেশ্যই ছিল বাংলাদেশ যে একটি পুলিশি রাষ্ট্র তা জানান দেয়া। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ছোবলে গোটা দেশকে আক্রান্ত করা হয়েছে। এরপরেও কেউ যাতে টু শব্দ করতে না পারে সেজন্য পুলিশ প্রতিনিয়ত তাদের পেশী প্রদর্শন করে যাচ্ছে। আজকের ঘটনা সেটিরই একটি বর্ধিত রূপ। বিরুদ্ধমত পেশের কোন পথ না রাখা, বিরোধী দলকে উৎপীড়ণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখা, মুক্তকন্ঠের ব্যক্তির বাকস্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করা এবং কালাকানুনের বিষাক্ত বৃত্তের মধ্যে মানুষের নাগরিক অধিকারকে বন্দী করে রাখতেই অবৈধ সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, ‘মানুষের গণতান্ত্রিক সহজাত অধিকারগুলোকে নির্দয় দমনের কষাঘাতে ‘শয্যাশায়ী ও মরণাপন্ন’ করেছে সরকার। মানুষের সমষ্টিগত ভবিষ্যতকে ধ্বংস করে এক চিরস্থায়ী ক্ষমতাবলয় তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। আর এ কারণেই রফিকুল আলম মজনুকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও শ্যামপুর থানা বিএনপি নেতা কাজী ইমতিয়াজ আহমেদ টিপু, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহবায়ক জহিরুল ইসলাম বাশার, মুগদা থানা বিএনপি’র সদস্য মোঃ মজিবর, ছাত্রদলের স্টাফ মুন্নাসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি হামলায় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম মামুন, যুগ্ম আহবায়ক আকরাম আহমেদ, তাইফুর রহমান ফুয়াদসহ ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়। বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রায় ৩০/৩৫টি মোটরসাইকেল উঠিয়ে নিয়ে গেছে পুলিশ।

এসময় রিজভী পুলিশি এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে রফিকুল আলম মজনুসহ আটককৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার পেছনে আছে সরকারপ্রধানের অভয়বাণী। সেই কারণে পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে এধরণের হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। অবৈধ সরকার স্বার্থপরতা, নীচতা, ভীতিপ্রদর্শন ক্ষমতা, নীতিহীনতা দিয়ে আর বেশিদিন রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com