‘গুম-খুনে জড়িত সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি’

0

সরকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে আড়াল করতে ও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কৌশল নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন,‘মানবাধিকার লংঘনের দায়ে সাতজন সরকারি কর্মকর্তাকে রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বিএনপি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ চায়।’

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মানবাধিকার ভাঙার এই অভিযোগ আড়াল করার জন্য জনগণের ট্যাক্সের টাকায় লবিস্ট নিয়োগের তথ্য মার্কিন সরকারি ওয়েব পেজে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে আড়াল করতে চায়। তারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দুঃশাসনকে প্রলম্বিত করছে। এ জন্য সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কৌশল নিয়েছে।

মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চারটি বিষয় আমরা উপস্থাপন করছি,  বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন, ভিসা বাতিল এবং নিষেধাজ্ঞা, সরকার এবং আওয়ামী লীগের লবিস্ট নিয়োগ এবং , সত্যকে ধামাচাপা দিতে বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে সরকারের মিথ্যাচার করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ বাংলাদেশের জনগণসহ দেশের সীমানা পেরিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহীন, ন্যায় বিচারহীন একটি দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে যা আপনারা সবাই অবগত।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে যদি নির্বাচন ব্যবস্থাকে আইসিইউতে ঢুকানো বলে অবহিত করি, তাহলে বলা যায় যে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে করে, রক্তের হলি খেলায় মত্ত এই দানব কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার কবর রচনা করেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার হরণের জন্য সরকারী বাহিনী ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, রাজনৈতিক গায়েবী মামলার মত মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত এই সরকারের অপকর্মের ফিরিস্তি আজ। সর্বজনবিদিত, ফলে, তাদের অপকর্মের জন্য যদি কারও ভিসা বাতিল হয় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয় তা জাতির জন্য লজ্জাজনক ও কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সকলের নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, মানবাধিকার নিশ্চিত করা। ন্যায়। বিচার প্রতিষ্ঠা চায়, গণতন্ত্র ফেরত চায়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগণের করের টাকায়। আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকৃত। তার ভাষ্যমতে, সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। খুন, গুমের মত অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির দায়
কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কিভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? বিএনপি মনে করে, জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লংঘনের মত গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের ৩ বছরে সজিব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতায় ৯০ লক্ষ (৯ মিলিয়ন) ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে। যার প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্টের সরকারি ওয়েব পেজে আছে। বিএনপি জানতে চায়, সজিব ওয়াজেদ জয়ের ঐ টাকার উৎস কি ছিলাে, কিভাবে ঐ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলো?

আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কথা বলছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই চিঠি দেখিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আপনারা দেখুন ওটা কাকে লেখা হয়েছিল বা চিঠির বিষয়বস্তু কি ছিল। বিএনপি মানবাধিকার লংঘনের শিকার সকল ব্যক্তিদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড। তাই, বিএনপি তার আন্দোলন সংগ্রামের অংশ হিসাবেই দেশের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের সমর্থন চায়, মানবাধিকার লংঘন বন্ধ চায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশী-বিদেশী সব অংশীদারদের এই সরকরারের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত করে রাখতে চায় ।

তিনি বলেন, বিদেশ লেখা আমার ওই চিঠি সমূহ কোন লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহবান মাত্র ! আপনারা দেখছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টিও আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে যদি কোন প্রবাসী কোন পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপ দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়। ওই পদক্ষেপকে নৈতিক সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোন কিছু বিএনপি বহন করে না। তবে, বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com