বাকশাল প্রতিষ্ঠার নীলনকশাকে প্রতিহত করতে হবে: বিএনপি

0

নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন ‘বাকশালের মতোই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে যে কাজটা ১৯৭৫ সালে করতে পারেনি, তা করার জন্য ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে গেছে। একটা মোড়ক রেখেছে সামনে, একটা ছদ্মবেশ-লেবাস যে বহুদলীয় গণতন্ত্র এখানে আছে। আসলে এখানে কোনো বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই। একটা নির্বাচনের লেবাস।

‘যে দুইটি নির্বাচন তারা ইতোমধ্যে করেছে, যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণ ভোট দেওয়ার অধিকার পর্যন্ত পায়নি। এখন আবার একটা আইনও তৈরি করল, নির্বাচন কমিশন গঠন আইন। ঠিক সেই বাকশালের মতোই। বাকশাল ১১ মিনিটে ছিল। আর সাতদিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ইসি আইনও পাশ করে নিল সংসদে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ এর প্রসঙ্গ টেনে গত রোববার বিকালে এক আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাকশাল একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। কারণ এই বাকশালের মধ্য দিয়ে সেদিন দেশে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, রাজনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, স্বপ্নকে ধ্বংস করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তারা দেশ ও জাতিকে গভীর অন্ধকারের ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা আজকে ঠিক একইভাবে দেখছি আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে দলীয়করণ করেছে, লুটতরাজের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। সব রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর হাতে দমন করছে। বিশেষ করে যারা স্বাধীনচেতা গণতান্ত্রিক মানুষ, তাদেরকে হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদের ভাষাকে বন্ধ করা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন তৈরি করে যারা কথা বলতে চান- তা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার নীল নকশা শুরু হয়েছে। এই নীলনকশাকে প্রতিহত করতে হবে। সেটা আমাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়েই। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে, বিএনপির নেতৃত্বে এই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী বাকশালের নব্য প্রেতাত্মার যে সরকার তাকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনপ্রতিনিধির পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি নির্বাচন করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না। তারা স্বৈরাচারী, গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি। গণতন্ত্র নেই বলেই দেশ একটা অন্ধকারের গহ্বরের কিনায় পৌঁছেছে। এ থেকে দেশকে রক্ষা করতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন সময় এসেছে দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারকে সরানোর।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকের দিনের সঙ্গে বাকশালের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। ১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারি বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বস্ত্র হরণ করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরা সম্ভব হয়েছিল।

দেশের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিলম্বে হলেও বিশ্ববাসী আমাদের দেশের সন্তান হারানো মায়ের কান্না, ভাই হারানো বোনের কান্না শুনতে পেয়েছে। আজকের দিনে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রতিশ্রুতি হোক এই সরকার যে অবস্থায় দেশকে নিয়ে গেছে, গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহরণ, দুর্নীতি ইত্যাদি অপবাদ থেকে দেশকে রক্ষা করব। গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদেরকে জিয়াউর রহমানের পথ ধরে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্র ফেরাতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com