জিমি কার্টারের শেষকৃত্যে পাঁচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘায়ুর অধিকারী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার গত সপ্তাহে একশ বছর বয়সে মারা গেছেন। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্লেইনসে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালে আলোচিত সাবেক এই প্রেসিডেন্টের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে যোগ দিয়েছিলেন দেশটির বর্তমান ও সাবেক প্রেসিডেন্টে এবং ভাইস প্রেসিডেন্টেরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে, জো বাইডেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প, বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটনকে। এসময় তারা প্রথম সারিতে একসঙ্গে বসেছিলেন।
এছাড়া নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়া ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং তার পূর্বসূরি মাইক পেন্স ও আল গোরও কার্টারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা নির্বাচিত রাজনীতিবিদ এবং জনসাধারণের মধ্যে ছিলেন।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়া দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও তার স্বামীর সঙ্গে বসে ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবার কার্টারের ‘চরিত্রের’ প্রশংসা করেছেন এবং ‘আমেরিকায় একজন বেসরকারি নাগরিক হিসেবে একটি শক্তিশালী পরিবর্তন এনে পোস্ট-প্রেসিডেন্সি মডেল’ প্রতিষ্ঠার প্রশংসা করেছেন।
বাইডেন বলেন, ‘পৃথিবীতে আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যবান করে তোলা, এটাই একটি ভালো জীবনের সংজ্ঞা।’ এ সময় তিনি কার্টারের উদাহরণের শক্তি জানতে সবাইকে উৎসাহিত করেন।
জিমি কার্টার ও জো বাইডেন কয়েক দশক ধরে একে অপরকে চিনতেন। বাইডেন তার বক্তব্যে এসব বিষয়ে অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন।
অনুষ্ঠান শুরুর আগের ছবিতে দেখা যায়, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত ট্রাম্প ও ওবামা হাসিমুখে কথা বলছিলেন।
সাবেক ও নবনির্বাচিত ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প তার স্বামীর সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কিন্তু মিশেল ওবামা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।
অতিথিরা যখন তাদের আসনে বসছিলেন, তখন ট্রাম্প এবং তার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স করমর্দন করেন। ২০২৪ সালের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর তাকে সমর্থন করতে অস্বীকৃতি জানান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, জর্জিয়ার ডেমোক্র্যাট রাফায়েল ওয়ার্নক, জন অসফ ও বার্নি স্যান্ডার্সসহ আইনপ্রণেতারা।
এই অনুষ্ঠানে পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা, নেদারল্যান্ডসের অরেঞ্জ-নাসাউয়ের রাজকুমারী মেবেল ও জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসসহ বেশ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক বিশ্বনেতা এবং বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, যদিও দুই রাজনীতিবিদ একে অপরের কাছাকাছি বসেছিলেন। গির্জায় প্রবেশের পর তারা করমর্দনও করেননি। কমলা হ্যারিস তার আসনে বসার সময় ট্রাম্পকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
পরে কমলা হ্যারিস বুশের সঙ্গে কথা বলার সময় হ্যারিসের স্বামী সেকেন্ড জেন্টলম্যান ডগ এমহফ ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দন করেন। এ সময় অতিথিরা কার্টারের দায়িত্ব গ্রহণের আগে ও পরে জনসেবার প্রতি তার অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন