কুখ্যাত ‘বাকশাল’ ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা: তারেক রহমান

0

১৯৭৫ সালের দেশে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, জাতীয় সংসদকে ব্যবহার করে, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী, যে দিনটিতে কুখ্যাত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেই দিনটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অভিশপ্ত দিন। বাকশাল ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। মুক্তিযোদ্ধাদের আকাংখার প্রতি চরম বেইমানি। কারণ আরেকটি ‘আয়ুব’ কিংবা ‘ইয়াহিয়া’র শাসন দেখার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা দেশটি স্বাধীন করেননি। প্রাণ বিসর্জন দেননি। অথচ বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীন দেশে মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছিল। দেশে একদলীয় বর্বর শাসন চালুর অপচেষ্টা হয়েছিল। তবে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ কুখ্যাত বাকশালীয় অপশাসন মেনে নিতে পারেনি। মেনে নেয়নি। বরং, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, সিপাহী জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে, বাকশালী চক্র, তাদের দোসর এবং তাঁবেদারদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে।

গতকাল রোববার (৩০ জানুয়ারী) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি উদ্যোগে ‘২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫: বাকশাল’ শীর্ষক আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, এটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরে বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর থেকেই মূলত: গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ঐতিহাসিক বাস্তবতা হলো, ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় এসে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের অন্যতম প্রধান উদ্যোগটি ছিল, দেশে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করা। এরই অংশ হিসেবে ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে পলিটিক্যাল পার্টি রেগুলেশন/পিপিআর জারি করা হয়।এই পিপিআরে’র আওতায় সেই সময় মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নিষিদ্ধ করা আওয়ামী লীগসহ কমপক্ষে ৫৬টি রাজনৈতিক দল, দেশে স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ চেয়ে স্বাধীনতার ঘোষকের কাছে আবেদন করে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন তথ্য প্রমাণে দেখা যায়, সেই সময় রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদনের ভিত্তিতে প্রথম দফায় আওয়ামী লিগসহ ২৩টি রাজনৈতিক দলকে স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তবে এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, সেই সময় কিন্তু ‘বাকশালে’র পুনরুজ্জীবন চেয়ে কেউ আবেদন করেনি। এর অর্থ হলো, সাধারণ জনগণ যেভাবে ঘৃণিত বাকশাল প্রত্যাখ্যান করেছে, একইভাবে সেই সময়কার আওয়ামী লীগ পর্যন্ত ‘বাকশালী’ কলংকের দায়ভার নিতে চায়নি।

তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় ‘বাকশাল’ নিয়ে নতুন রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছিলেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সেইসময় ‘বাকশাল’ প্রত্যাখ্যান করে ৭৬ সালের ৪ নভেম্বর থেকে ‘আওয়ামী লীগ’ নামেই নতুন যাত্রা শুরু করে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কেন আওয়ামী লিগ নিষিদ্ধ করলেন ? আবার পরবর্তীতে সুযোগ পেয়েও আওয়ামী লিগ কেন বাকশাল পুনরুজ্জীবনের জন্য আবেদন করলোনা? ‘ইতিহাস’ কখনো আদালত আর র্যাব-পুলিশের খড়গ মুক্ত হতে পারলে নতুন প্রজন্মের সামনে এইসব প্রশ্নের সঠিক জবাব স্পষ্ট হয় উঠবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতার প্রতি অতি লোভ আর জনস্বার্থবিরোধী ভূমিকার কারণে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত একটি দলে পরিণত হয়েছিল। ফলে ‘আওয়ামী লীগ’ নিষিদ্ধ করে, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানকে খুনি রক্ষীবাহিনীর উপর ভর করে একদলীয় ‘বাকশাল’ চালু করতে হয়েছিল। একইভাবে বর্তমানেও জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামি লীগকে এখন রক্ষীবাহিনীর পরিবর্তে র্যাবের ঘাড়ে বন্দুক রেখে অঘোষিত ‘বাকশাল’ চালু করতে হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com