আ.লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় শুনলে পশুপাখি, জানোয়ারও বিব্রত বোধ করে: গয়েশ্বর
আগামী নির্বাচনের আগেই ইভিএম ম্যাশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গতকাল শনিবার (২২ জানুয়ারি) প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ন্যায় বিচারের দাবিতে জিয়া নাগরিক ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নারায়ণগঞ্জকে তারা উদাহরণ সৃষ্টি করতে চান। তারা মনে করেন নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আমার একটা কথা মনে হয়, এই সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় এই কথা শুনলে পশুপাখি, জানোয়ারও বিব্রত বোধ করে। সরকার বিব্রতবোধ করে না কেন? আগামী নির্বাচনের আগেই এই ইভিএম ম্যাশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, করোনাকে সরকার যখন রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে নেয় তখন তো এটার বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার দাবিতে যেভাবে সারাদেশে গণজোয়ার শুরু হয়েছে তাতে সরকার বিধিনিষেধ, ১৪৪ ধারা দিচ্ছে। সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত। বিএনপির শক্তি সরকার পরিমাপ করতে পেরেছে৷ সরকার যে জনরোষে পড়েছে তা মোকাবেলা করতেই করোনাকে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করেছে৷শতকরা ৮০ ভাগ জনগন মনে করে, এই বিধিনিষেধ রাজনৈতিক আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য দেওয়া হয়েছে, জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করে নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, তিনি বলেছেন আমেরিকায় লক্ষাধিক লোক প্রতিবছর নিখোঁজ হয়। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বলব, বাংলাদেশের অপকর্মের জন্য যদি আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে আর আপনি যখন নিশ্চিত আমেরিকাতে এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে আমেরিকাকে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি না কেন? আর আমেরিকাতে যেটা ঘটে সেটাই বাংলাদেশে ঘটবে এটাকে জায়েজ করার চেষ্টা কেন করেন?
গয়েশ্বর বলেন, কিছুদিন আগে নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে কিছু বিলাপ-প্রলাপ হলো৷ পরে সরকারি দলই আইনের প্রস্তাব করল। মাঝখানে আইনমন্ত্রী বললেন, আইন তো জটিল ব্যবস্থা। এতো তাড়াতাড়ি করা যাবে না। এখন শুধু আইন না, ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন যা যা করেছে তার সবকিছুর বৈধতাও দিয়েছে এই আইনের মাধ্যমে। কিন্তু তারা এতোদিন যা করছেন তা বেআইনী। এখন একটা আইনী প্রলেপ দেওয়া হলো। অর্থাৎ এতোদিন বিনা কাবিনে সংসার করছেন, এখন কাবিন করা হল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা বিদেশে চলে যায়, রিজার্ভ চুরি হয়। আজ পর্যন্ত কেউ ধরা পড়ে না। এই সরকার রিজার্ভ চুরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে জড়িত না হলে কাউকে ধরার চেষ্টা করে না কেন? কত খুনের আসামী ধরা পড়ে, সাগর-রুনীর আসামী ধরা পড়ে না কেন?এই রিজার্ভ চোর, খুনীদের প্রশাসন চেনে কিন্তু ধরে না।
জেলকে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, পুরো দেশটাই যখন জেলখানা সেখানে ছোট্ট একটা কক্ষে যেতে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। পালাক্রমে এখানে অনেকেই আসবে, বের হবে।
তিনি বলেন, সামনে জেলখানা আরও বড় করতে হবে। কারণ পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা এতো চোর, খুনী, সন্ত্রাসীদের এই জেলখানায় জায়গা দিতে পারবে না।তাই জেলখানা বড় করতে হবে। প্রয়োজন হলে তাবু টানানো হবে। আমাদের এখন আর জেলে যাওয়ার পালা না, এখন জেলে যাওয়ার পালা তাদের।