গণতন্ত্র হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনই আ.লীগ সরকারের সাফল্য: মির্জা ফখরুল

0

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের সফলতা বলতে কিছু নেই। গণতন্ত্রকে হত্যা আর মানবাধিকার হরণই তাদের বড় সাফল্য। উন্নয়নের নামে তারা দেশে একটা লুটপাটতন্ত্র কায়েম করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে দেশে প্রতিষ্ঠা করেছে একদলীয় বাকশাল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে গণতন্ত্র আর ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। এটা জাতির জন্য লজ্জার। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের অধীনে দেশে কখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ দাবি আদায়ে সব রাজনৈতিক দল নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে উত্তরায় নিজ বাসভবনে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বর্তমান সরকারের তিন বছরের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকারকে আমরা কখনো বৈধ সরকার বলে মনে করি না। কারণ, তারা দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতা দখল করেছে। নৈতিকভাবে এ সরকারের ভিত খুবই দুর্বল। কারণ, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি। তাই জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই। ২০০৮ সাল থেকে তারা একপ্রকার জোর করে ক্ষমতায় আছেন। ক্ষমতায় আসার পর দিনদিন তারা কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠেছেন। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সীমিত করে ফেলেছেন। জনগণের মৌলিক অধিকার নিয়েও আমরা রাজপথে কথা বলতে পারছি না। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব জাহির করছেন। সরকারের ভয়ে দেশের সুশীলসমাজও কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ নানা আইনের মারপ্যাঁচে গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরেছে। বিচার বিভাগকে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তোষামোদ ছাড়া এখন আর কিছু নেই। কারও কিছু করারও নেই। এসব দেশের জন্য একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের এ চিত্র আমাদের ব্যথিত করে। একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও মানুষের মৌলিক অধিকারের জন্য এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর ও একটি অবাধ নির্বাচন। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হবে। কিন্ত দুর্ভাগ্য এতদিন পরও আমরা সেই কাক্সিক্ষত দেশ পেলাম না। আজও গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের জন্য আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে। জাতি হিসাবে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মূল শক্তি হচ্ছে গণতন্ত্র। এটা যদি সরকার ধ্বংস করে দেয় তবে অন্য দেশের এখানে প্রভাব বিস্তার সহজ হবে, যা এখন হচ্ছে। বহির্বিশ্বের প্রভাব আমরা কখনো চাইনি। অথচ এখন বহির্বিশ্বের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এখন ভারত প্রভাব বিস্তার করে, চীন করে, এমনকি পশ্চিমা বিশ্বও আমাদের দেশে প্রভাব বিস্তার করে। তাহলে আমরা স্বাধীন হলাম কোথায়।

পদ্মা সেতু, মেট্ররেলসহ উন্নয়ন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে দেশে লুটপাটতন্ত্র কায়েম করেছে। সিপিডিসহ আরও কয়েকটি সংগঠন বলছে, সরকার কমিশনের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে পয়সা কামানো। কমিশন খাওয়া। একটা প্রকল্পের নামে উন্নয়নের কথা বলে যে বিনিয়োগ হয়, সেখান থেকে বড় একটা অংশ তারা নিজেরা নিয়ে নেয়। এটাই হচ্ছে বর্তমান সরকারে আসল চেহারা। ফলে দেখা যাচ্ছে, এসব প্রকল্পে যে পরিমাণ অর্থ বিনিযোগ হচ্ছে, সেভাবে রেজাল্ট আসছে না। গণতন্ত্র হত্যা করে তারা মানুষকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছে। কিন্তু উন্নয়ন মানেই তো গণতন্ত্র নয়। দেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু এখনো রাস্তায় নামলে দেখা যায়, ওএমএস-এর ট্রাকের সামনে লম্বা লাইন। রাস্তায় বের হলেই ভিক্ষুক। তবে কিছু মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের কিছু লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন। করোনাকালে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লাগে। সরকার তা কাটিয়ে ওঠতে প্রণোদনা দেয়। কিন্তু সেখানেও নয়ছয় হয়েছে। তাছাড়া যাদের প্রণোদনা পাওয়া দরকার, সেই ক্ষুদ্র ও মধ্যম সারির উদ্যোক্তরা তা পায়নি। ফলে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র। এ দুটো না থাকলে দেশে সুষম উন্নয়ন হবে না। কিন্তু আমাদের দেশে এ দুটোই নেই।

ফখরুল বলেন, সরকার সফলতার গুণগান গাইছে। কিন্তু শেয়ারবাজার, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। বিদেশে পাচার হচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। দ্রব্যমূল্য লাগামহীন, সড়কে দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, খুন, গুম, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। দেশে কোনো বিনিয়োগ না থাকায় অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সবমিলে রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ।

সরকার দেশের মানবাধিকার ও মানুষের মৌলিক অধকার লুণ্ঠন করছে-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর ধারাবাহিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার বলতে কিছু নেই। গত তিন বছরে তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আমরা বারবার বলেছি। কিন্তু সরকার তা কর্ণপাত করেনি। এখন বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোও একই কথা বলছে। শুধু তাই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য লজ্জার। ৫০ বছরে দেশ এমন লজ্জায় পড়েনি। নিষেধাজ্ঞার পর সরকারের মন্ত্রীরা চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করে বললেন, দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কিছু হয়নি। এখন তা প্রত্যাহারের জন্য চিঠি লিখছে। চিঠি লিখছেন কেন, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে থাকতেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এভাবে চলতে থাকলে দেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। যখন রাষ্ট্রের অঙ্গগুলো কাজ করে না, তখন সেটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আমাদের দেশে তা-ই হয়েছে। যানজটের কারণে ঢাকায় চলাচল করা যাচ্ছে না। কিন্তু যানজট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেই। কারও কাছে যেন কারও কোনো জবাবদিহিতা নেই। যার কাছে জবাবদিহিতা করবে, সেই তো ঘুস খায়। সে আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করে। এসব জবাবদিহিতা না থাকার মূল কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক শূন্যতা। সরকার সুপরিকল্পিতভাবে দেশে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখন পুলিশ সংসদ-সদস্যকে বলছেন, এত বাড়াবাড়ি করেন কেন, আপনাকে তো আমরাই বানিয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র আশা করতে পারি।

তিনি বলেন, আমলাতন্ত্রের ওপর সরকার পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফলে এখানে যে পলিটিক্যাল ডাইমেনশন থাকার কথা, তা নেই। গণতন্ত্র হচ্ছে দেশের আত্মা। এ সরকার সেই আত্মাটা নষ্ট করে দিয়েছে। দেশের মানুষ যে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বাস করতে চায়, সেটাকে তারা নষ্ট করে ফেলেছে। তবে এ দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। ৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা মেনে নেওয়ার ফলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির সুযোগ হয়েছিল। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ধাপে ধাপে প্রতিটি নির্বাচন হওয়ার ফলে গণতন্ত্রে একটা যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু এরপর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সে অবস্থা থেকে আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি। এর কারণ, আওয়ামী লীগ দেশে একটা একদলীয় শাষণব্যবস্থা কায়েম করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের মুখোশ পরে ভেতরে ভেতরে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে মাঠের বিরোধী দল হিসাবে আপনারা ব্যর্থ বলেও অনেকে অভিযোগ করছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা বাজে কথা। এটাকে আমি বলছি অজুহাত। একটা বিরোধী দল কী করতে পারে, আন্দোলন করতে পারে। সেই আন্দোলন একটা জায়গায় গিয়ে সরকারকে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে ফেলতে চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু আমরা এখন কী দেখছি, রাস্তায় নামলে দেখামাত্র গুলি করা হচ্ছে, যা আগে কখনো ছিল না। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কী মামলা রয়েছে। তাছাড়া আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ না নেওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশে ছাত্ররাজনীতি বলতে কিছু নেই। শ্রমিক সংগঠন নেই বললেই চলে। রাস্তায় আন্দোলনের জন্য যে ফ্যাক্টর দরকার হয়, সেটা নেই। এছাড়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্পেস দিনদিন সংকুচিত করে ফেলছে। অর্থাৎ এমন একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, চাইলেও বিরোধী দল রাজনৈতিক মুভমেন্ট করতে পারছে না। তবে আন্দোলন হবে। কখন হবে, যখন জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। কিন্তু মানুষ কেন বের হচ্ছে না-এমন প্রশ্ন আসতে পারে। তারা দেখছে বের হলেই গুলি করে। তাই ভয়ে বের হচ্ছে না। তাছাড়া তাদের তো এত গরজও নেই। জীবন উৎসর্গ করার মতো মানসিকতা নেই। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মীদের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। গ্রামে-গঞ্জে হরতাল-অবরোধ পালিত হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্তভাবে আন্দোলন ফেল করেছে। ২০১৮ সালেও ফেল করেছে। এটাই হলো বাস্তবতা। বিশ্বের দিকে তাকান, একই চিত্র দেখবেন। রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া এমনকি থাইল্যান্ডে জনগণ কিছু করতে পারছে? সারা বিশ্বের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট হচ্ছে রাস্তায়, ওই ধরনের আন্দোলন করে কিছু করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ এবং বিদেশি শক্তির সহায়তায় পরিচালিত। ফলে এখানে অন্যান্য ইস্যু থাকে। একটা নির্বাচন সুষ্ঠু করা যাচ্ছে না।

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ গুরুত্ব হারিয়েছে-এমন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ ইতোমধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এসব সংলাপ করে কোনো লাভ হবে না। তাই এসব লোক দেখানো সংলাপে আমরা অংশ নেব না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। ইসি গঠনে অনেকে আইনের কথা বলছেন। কিন্তু আইন করলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মোটেই নয়। কারণ, সেই আইন বাস্তবায়ন করবে কে-বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। তাই সরকার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই হবে। যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, আইনটা যদি তারা বাস্তবায়ন করতে না পারে, তবে কোনো লাভ নেই। এটাই বাস্তবতা। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রেই সীমিত। যদি সরকারের সহায়তা না পাওয়া যায় তবে ইসি কোনো কাজ করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ থাকলে ইসি কী কাজ করবে। তাই আমাদের এই মুহূর্তে প্রধান দাবি হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। এটা ছাড়া হবে না। এ দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। সামনে আরও কঠোর আন্দোলনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই আন্দোলনে সরকারবিরোধী সব দলকে একই প্ল্যাটফরমে আনার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা আলোচনাও শুরু করেছি। বৃহত্তর পরিসরে একটা কমন ইস্যুতে যুগপৎ আন্দোলন হতে পারে। তবে বৃহত্তর ঐক্যের ক্ষেত্রে জামায়াত বড় বাধা নয় বলে আমরা মনে করছি। ইস্যুটা ঠিক থাকলে সবাই একমত হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তো ভেঙে দেওয়া হয়নি। নানা কারণে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ কম হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ পেলে তাকে চিঠি দিয়ে বিস্তারিত জানাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে চিঠি দেব কি দেব না, সেটাকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি না।

পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে দলে কোন্দল এবং অনেককে অব্যাহতি দেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলে এমন কোন্দল থাকবেই। কারণ, দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকায় কমবেশি কোন্দলও থাকে। তবে বিএনপিতে তা খুবই কম। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দক্ষ নেতৃত্বে দলের পুনর্গঠন কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছি। দলে একটা সেটআপ তৈরি হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে পাঠানো প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের চেয়ারপারসন খুবই অসুস্থ। চিকিৎসকরা সাধ্যমতো তার চিকিৎসা করছেন। দেশের বাইরে যেতে চেয়ারপারসন আগ্রহী নন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে তাকে বিদেশ নেওয়া প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েক দফা আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তারা আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে। চেয়ারপারসনের মুক্তি এবং তাকে বিদেশ পাঠানোর দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। সামনে আরও কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

দলের কাউন্সিল প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু টেকনিক্যাল কারণে আমরা কাউন্সিল করতে পারছি না। আমাদের নেত্রী কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে কাউন্সিল করা সত্যিই আমাদের জন্য কঠিন। তারপরও আমরা কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ লক্ষ্যে দল পুনর্গঠনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com