সফল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সমাবেশ: পথে পথে বাধা তবুও ঠেকানো যায়নি জনস্রোত

0

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে পথে পথে বাধা সৃষ্টির পরও ঠেকানো যায়নি জনতার স্রোত। পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করায় শহরতলীর নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী বাজারে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ যোগ দেয় হাজার হাজার নেতাকর্মী।

নানা বাধা ডিঙ্গিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া এমপি ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

এদিকে ১৪৪ ধারা জারির পর কার্যত এক প্রকার অচল হয়ে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয় নেতাকর্মীরা। তবে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবসান হয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার।

বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘিরে শুক্রবার থেকেই উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। শহরের ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার এলাকায় বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে মহাসমাবেশ আহ্বান করে। এজন্য মৌখিক অনুমতিও পায় প্রশাসনের।

এর মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রসমাবেশ আহ্বান করে ওই এলাকায়। শনিবার দুপুরে দুটি সংগঠনের সমাবেশ আহ্বান করায় উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হায়াত উদ দৌলা খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

এর আগেই জেলা বিএনপি’র শীর্ষ ৩ নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তারা হলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান এবং সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ৬ শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয় শহরের ৫২টি পয়েন্টে। জেলার আভ্যন্তরীণ গণপরিবহন বন্ধ থাকে। সকাল থেকেই পৈরতলা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। শহরের ভাদুঘর পৌর বাস টার্মিনাল থেকেও দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি বাস কাউন্টারের কর্মকর্তারা জানান, ভোরে কাউন্টারগুলো খোলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর এসে পুলিশের পক্ষ থেকে কাউন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। কনভেনশন সেন্টার এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার গাড়ি সমাবেশস্থলে আসার আগে আশুগঞ্জ এলাকায় আটকে দেয় পুলিশ। টোল প্লাজা এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে রুমিন ফারহানা এমপি স্থানীয় উজানভাটি হোটেলে অবস্থান নেন। সেখান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা পর তারা সমাবেশস্থলে রওয়ানা হন।

এর মধ্যে জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে সমাবেশের প্রস্তুতি চলতে থাকে। শহরতলীর ঘাটুরা, মীরহাটি ও বটতলী এলাকায় পৃথক দুটি স্থান নির্বাচন করে কর্মীরা সেখানে জড়ো হতে থাকে। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা বটতলী এলাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিলে দুপুর ২টা থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ যোগ দেয়। জেলার নাসিরনগর, আখাউড়া, কসবা, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর দলীয় কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেয়। সমাবেশে যোগ দিতে আসা পথে পথে নানা ধরনের বাধা বিপত্তি মধ্যে পড়ে। তবুও সমাবেশ সফল করে বিএনপি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com