বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে ঘরে ঘরে পুলিশের অভিযান
হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় ২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে। এর আগে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে এ মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের ধরতে দিন-রাত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এতে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন অধিকাংশ নেতাকর্মী। জেলায় বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে চালানো হচ্ছে অভিযান। গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান সেফুসহ ১৬ জন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক ও পদত্যাগী পৌর মেয়র জি কে গউছসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। এস আই নাজমুল হাসান বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট বিভাগের সকল উপজেলায় গতকাল এবং সকল জেলায় আজ প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। সবমিলিয়ে হবিগঞ্জে গতকালের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে।
জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক জি কে গউছ জানান, আমাদের নিরপরাধ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যারা ঐদিনের সমাবেশে ছিল না তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে আহত করলো উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আসলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পায়ের নীচে মাটি না থাকায় চোখে অন্ধকার দেখছে। তারা বিএনপি’র আন্দোলনকে ভয় পেয়ে হামলা-মামলা করে দমানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা জানে না এসব করে বিএনপি’র আন্দোলনকে থামানো যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হলে সরকারকে এর চরম মূল্য দিতে হবে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বুধবার সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়। সমাবেশে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জয়নাল আবেদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার শিপা এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকার কথা। দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা হবিগঞ্জে এসে সভায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরইমধ্যে বেলা ২টার কিছু পূর্বে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে রওনা হয়। এ সময় শায়েস্তানগর পয়েন্টে বিনা উস্কানিতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা ও গুলি চালায়।