খালেদা জিয়ার জীবনকে নিঃশ্বেস করে দেয়ার আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছে ভোটারবিহীন সরকার: রিজভী
সরকারের মনুষ্যত্বহীন অমানবিকতার বিরুদ্ধে দেশবাসী ক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদে সোচ্চার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মুক্ত বেগম খালেদা জিয়ার অস্তিত্বকে অন্যায়-অবিচারের ধারক এবং গণতন্ত্র খুন করার কসাই সরকার অজানা আতঙ্কে ভুগছে। জনগণের নেত্রীকে হাজারো বাধার মুখেও আটকিয়ে রাখা যাবে না, জেনেই তার জীবনকে নিঃশ্বেস করে দেয়ার যাবতীয় আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছে ভোটারবিহীন সরকার।’
গতকাল শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন,‘জাতির ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় অর্জন ‘৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয়। ৯ মাস এদেশের বীর সন্তানরা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করে। লাখো শহীদের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা লাভ করলেও স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই স্বজাতির রক্তপায়ী দানবেরা স্বাধীনতার অন্তর্নিহিত মূল স্পিরিট গণতন্ত্রকে দাফন করেছে। কখনো বাকশালের নামে, কখনো উন্নয়নের নামে কণ্ঠের স্বাধীনতাকে কেড়ে নিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুমাত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা। সৃষ্টি করেছে এক ভয়ঙ্কর ভয়ের পরিবেশ। এবার বিজয় দিবসের সূবর্ণ জয়ন্তী হলেও দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র হত্যাকারীরা ক্ষমতায়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,‘এই মুহূর্তে বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতাসহ মৌলিক মানবাধিকার হরণ করা হয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের বিকাশের স্থানে নাৎসীবাদের বিকাশ লাভ করেছে। ক্ষমতায় চিরস্থায়ীভাবে টিকে থাকার মোহ থেকেই আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বারবার গণতন্ত্রকে জবাই করেছে। আর এটি করতে গিয়ে সারাদেশকেই বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। তারা দেশের জনগণ, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বিরোধীমতের মানুষকে মনে করে ভাড়াটিয়া বা প্রজা, আর নিজেদের দেশের মালিক মনে করে।’
রিজভী বলেন, নিহত গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। একদলীয় বাকশালের বিষাক্ত গ্যাসচেম্বার থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিশুদ্ধ বাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন দেশের শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়াউর রহমান। সেই গণতন্ত্রের পথচলাকে আবারও বন্দুকের নলের মুখে বন্দী করেন হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। আবারো ৯ বছরের নির্ভিক দুঃসাহসী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে বন্দী গণতন্ত্রকে মুক্ত করেন এদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাই জনগণের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে বারবার অসীম দৃঢ়তা নিয়ে দাঁড়ানোর জন্যই বর্তমান নিশিরাতের সরকার বেগম জিয়াকে বন্দী করে রেখেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গতকাল সাদা পোশাকধারীরা ঢাকা মহানগর উত্তর আদাবর থানাধীন ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হাসান জীবনকে তুলে নিয়ে গিয়ে এখনও পর্যন্ত তার কোন হদিস না দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক মনোয়ার হাসান জীবনকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং তার কোন খোঁজ না দেয়ার ঘটনায় বর্তমান নিশিরাতের সরকারের চলমান গুমের আরেকটি নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। মনোয়ার হাসান জীবনকে ডিবি পুলিশই আটক করে নিয়ে গিয়ে এখন কোন হদিস দিচ্ছে না। তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার পরিবারসহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে মনোয়ার হাসান জীবনকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানান।