১৯৭১-এ প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজো বিদ্যমান: তারেক রহমান
১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজো বিদ্যমান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ (১৬ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাণীতে তিনি বলেন, “মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি প্রবাসী বাংলাদেসীসহ দেশবাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কামনা করি তাঁদের অব্যাহত সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ। আজকের এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেসব নির্ভিক বীর শহীদদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। পরাধীনতার হাত থেকে দেশের বিজয় অর্জনে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন- আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।
তিনি বলেন, শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়েই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর গৌরবময় বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশীদের জয়যাত্রা শুরু। এই দিনে নিজ পরিচয়ে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি।
তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে আমাদের গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে, জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মৌলিক অধিকার, মানবিক সাম্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্থাৎ বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, ১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজো বিদ্যমান। আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে আমাদেরকে একটি পদানত জাতিতে পরিণত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। এখনও ষড়যন্ত্রকারীরা নানাবিধ নীলনকশা রচনা করে আমাদের বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে দুর্বল করে চলেছে।
৫ জানুয়ারী ২০১৪-তে প্রহসনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একতরফা নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতের নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশে এখন মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নেই। এদেশের মানুষ এখন সম্পূর্ণভাবে অধিকার হারা। এদেশে বহুমাত্রিক বহুদলীয় গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র হতাশা, ভয় আর নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে। ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে রক্ত ঝরাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি যেন ভয়ংকর অন্ধকারাচ্ছন্ন। যিনি জীবনের দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন সেই অবিসংবাদিত নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে নানা শর্তের বেড়াজালে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ, হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। অথচ সরকার তাঁর সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে প্রেরণের সর্বমহলের দাবিকে অগ্রাহ্য করে আসছে। বিজয় দিবসের চেতনা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে নেত্রীর মুক্তি এবং বিদেশে তাঁর সুচিকিৎসার দাবির আন্দোলনে, গণতন্ত্র পুণ:রুদ্ধারের অঙ্গীকারে।
এসময় তিনি ক্ষমতাসীনদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বর্তমান অশুভ অগণতান্ত্রিক শক্তি তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণ ও জুলুমকেই বেছে নিয়েছে। ওদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরনায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও তিনি মহান বিজয় দিবসে দেশবাসী সকলের প্রতি সেই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান, এবং বিজয় দিবস উপলক্ষে সকল কর্মসূচীর সাফল্য কামনা করেন।