সহিংসতার কারণে মেয়েরা চাকরি ও পেশা নির্ধারণেও নানারকম চাপের মুখে থাকেন: রব
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, বিদ্যমান দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং নৈতিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য আপোষহীন ও নিষ্কলুষ ছাত্ররা প্রতিনিয়ত রাজপথে নামছে। এখন প্রয়োজন গণসম্পৃক্তির, যা গণজাগরণ ও গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের বিজয় নিশ্চিত করবে।
ঘটনার অনিবার্য গতিতেই সরকার বিদায় নেবে।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক নারী জোটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেএসডি সভাপতি এসব কথা বলেন।
আ স ম রব বলেন, সংবিধানের ১০ অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণের কথা বলা হলেও গত ৫০ বছরে তা কার্যকর করা হয়নি। বরং নারীরা পারিবারিক বলয়, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং জনসমাগমস্থলে প্রতি মুহূর্তে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। সহিংসতার কারণে মেয়েরা চাকরি ও পেশা নির্ধারণেও নানারকম চাপের মুখে থাকেন। নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে না পারলে সে সমাজকে সভ্যসমাজ বলা যায় না। বিদ্যমান নিবর্তনমূলক ও অমানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করার মধ্য দিয়েই মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে নারী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক নারী জোটের সভানেত্রী তানিয়া রব। তার উত্তরা বাসভবনে এই প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ও নারীমুক্তির প্রশ্নে তানিয়া রব ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
১. প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে নারীর মর্যাদা সুরক্ষায় ‘মহিলা’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা।
২. রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণসহ জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের ন্যায়সঙ্গত ‘অংশীদারত্ব’ সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত কর।
৩. জাতীয় সংসদে নারীর সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বর্তমানের ৫০ থেকে ১০০ উন্নীত করে তা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করার অধিকতর গণতান্ত্রিক বিধান প্রণয়ন করা।
৪. জেন্ডার বৈষম্য বিলোপসহ বৈষম্যমূলক সব আইন বাতিল করে নারীর অবস্থানকে সমাজে অন্তর্ভুক্তিমূলক করার লক্ষ্যে একটি স্থায়ী ‘জাতীয় নারী কমিশন’ বা ‘জাতীয় নারী কাউন্সিল’ গঠন করা।
৫. নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন-হয়রানিসহ সব ধরনের অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচার প্রতিরোধে কার্যকর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
৬. বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
৭. সংস্কৃতিচর্চা ও সামাজিক রীতিনীতিকে অধিকতর নারীবান্ধবকরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
সভায় তানিয়া ররের উত্থাপিত ৭ দফা প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
সভায় নারীজোট নেত্রীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সৈয়দা ফাতেমা হেনা, হাসিনা রওনক, আনিসা রত্না, ফারজানা দিবা, অ্যাডভোকেট এলিজা রহমান অদিতি, শিরিন আক্তার, মায়া খাতুন, মেহেরুন্নেসা শাহীন, ইলোরা খাতুন সোমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।