ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১৪২ জন হাসপাতালে
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১৪২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ১০৪ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৩৮ জন ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ভর্তি হওয়া ১৪২ জনের মধ্য ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে ৫১ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫৩ জন ভর্তি হন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৮ জন।
শনিবার (২০ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের (ইনচার্জ ও ডিপিএম, ই-হেলথ, এমআইএস) ডা. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ৫৪৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪৩৬ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১০৭ জন।
এ ছাড়া, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৩৪৩ জন। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে নয়জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন এবং জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬ জন, আগস্টে ৭ হাজার ৬৯৮ জন, সেপ্টেম্বরে ৭ হাজার ৮৪১ জন, অক্টোবর ৫ হাজার ৪৫৮ জন এবং চলতি নভেম্বরে ২ হাজার ৬৮৮ জন ভর্তি হন।
একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ হাজার ৭০২ জন। মারা গেছেন ৯৮ জন। মারা যাওয়া ৯৮ জনের মধ্যে জুলাইয়ে ১২ জন, আগস্টে ৩৪ জন এবং সেপ্টেম্বর ২৩ জন, অক্টোবরে ২২ জন এবং ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়।
এর আগে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। ওই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে, সেবার ৫৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ ছাড়া, ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যায়। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারি মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী।
ডেঙ্গু প্রকোপের এ সময়ে বাসাবাড়িতে অব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্রে পানি জমতে না দেওয়াসহ দিনে ও রাতে মশারি টানানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।
দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা এখনও চলছে। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা এবং প্রতিরোধমূলক প্রোটোকল মেনে চলা সর্বোত্তম উপায়। এটি মনে রাখা উচিত যে ডেঙ্গু একটি সংক্রমণ হিসেবে রয়ে গেছে, যা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্মূল করা যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত ভালো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি সম্পূর্ণ রূপে এড়ানো যায়।
দরজা, জানালার পর্দা, প্রতিষেধক, কীটনাশক সামগ্রী, কয়েলের ব্যবহার করতে হবে। ত্বকের সংস্পর্শে যাতে মশা কম আসতে পারে এমন পোশাক অবশ্যই পরতে হবে। প্রাদুর্ভাবের সময় স্প্রে হিসেবে কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। মশা ডিম পারতে পারে এমন জায়গায় নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। খোলা পাত্রে পানি জমতে দিলে হবে না, এ জন্য নিয়মিত নজরদারি করতে হবে।