সরকার রাতারাতি সবকিছুর দাম বাড়ালে ধর্মঘট ছাড়া উপায় কী?
‘সরকার হঠাৎ তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে বুধবার রাতে। বৃহস্পতিবার সকালে পাম্পে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানলাম শুধু তেল নয়, পাওয়ার ওয়েল ও মবিলের দামও লিটারে ৫০ টাকা বেড়েছে। রাতারাতি সবকিছুর দাম বেড়ে গেলো, এখন আমরা কী করবো? পরিবহন ধর্মঘট ডাকা ছাড়া তো কোনো উপায় দেখছি না।’
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন বাসচালক ফারুক হোসেন। তিনি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বন্ধন পরিবহনের বাস চালান।
ফারুক আরও বলেন, ‘সরকার হয় তেলের দাম কমিয়ে আনুক, তা না হলে ভাড়া বৃদ্ধি করুক। সরকার যা বলবে, আমরা তাই মানবো। আমরা সেবক হতে চাই, আমরা তো দানব না।’
এদিকে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে সারাদেশের মতো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই সড়কে কোনো বাস চলছে না। কেউ বাস চালাতে চাইলেও তাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ডগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী বন্ধন পরিবহন, উৎসব পরিবহন, আনন্দ পরিবহন ও শীততাপ নিয়ন্ত্রিত শীতল পরিবহনের বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কেউ কোথাও যাচ্ছে না।
বাসশ্রমিকরা একত্রিত হয়ে নজরদারি করছেন, কেউ বাস চালাচ্ছে কি না। যেই বাস চালানোর চেষ্টা করলেই তাকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। তারা বিআরটিসির বাসগুলোও আটকে দিচ্ছে।
বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল হোসেন বলেন, ‘পরিবহন মালিকরা কেউই ভালো নেই, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই।’
এদিকে, বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে জনসাধারণের। যদিও আজ সাম্পাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। তবে ছুটির দিনে জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো পরিবহন পাচ্ছে না।
শহরের টান বাজারের গার্মেন্টস কর্মী সাজন বলেন, ‘জরুরি কাজে আমাকে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল যেতে হবে। কিন্তু চাষাঢ়া এলাকায় এসে দেখি কোনো বাস নেই। শুনলাম সব বাস নাকি বন্ধ। এখন কীভাবে যাবো সেই চিন্তা করছি। আবার না গেলেও চলবে না।’