রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপনের কাজটি সৃষ্টি করেই কেবল গণমাধ্যম
১৬ জুন। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের কালো দিবস। জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক দিন। সংবাদমাধ্যম ও বাক–স্বাধীনতা হরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত।
গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে যেকোনো সরকারের নগ্ন হস্তেক্ষেপে রুদ্ধ হয়ে যায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, গোষ্ঠীর স্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা।
কেননা গণমাধ্যমকে বলা হয় সমাজ বা বাস্তবতার দর্পণ। এমনকি রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন বা যোগসূত্র স্থাপনের কাজটিই করে কেবল গণমাধ্যম।
তাই যেকোনো ফ্যাসিবাদী সরকার গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরায় নিমজ্জিত থাকে। কেননা ফ্যাসিবাদের লক্ষ্যই থাকে কেবল গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রচর্চার প্রতিষ্ঠান গুলোকে বিনষ্ট করে দেয়া, ধ্বংস করে দেয়া।
ঠিক তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্রচর্চার প্রতিষ্ঠান গুলো একের পর এক হুমকির মুখে পড়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
এমনকি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা উদার গণতন্ত্রচর্চার প্রাণস্বরূপ। সেই ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগে প্রধান বাধা হিসেবে পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। ফলে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কাঠামোর মধ্যেই বিপত্তিগভীর হয়ে উঠছে। এর সাথে সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে চলছে গণমাধ্যমের সামনে হুমকি। জোর–জবরদস্তিতন্ত্র যেভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে জনগণের কাছে আস্থাহীন করে তুলেছে, তেমনি ভাবে গণমাধ্যম নেটওয়ার্ককেও তারা নানাভাবে আক্রান্ত করছে।
গণমাধ্যমের কাছে দেশের জনগণ চায় মানবাধিকার লঙ্ঘন, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, দুর্নীতি, লুটপাট, জনবিরোধী চুক্তি, পরিবেশবিরোধী প্রকল্প ইত্যাদি ব্যাপারে গভীর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। অথচ গণমাধ্যম আজ জনগণের কাঙ্খিত চাওয়া পূরণেসম্পূর্ণ ব্যর্থ।
এই ব্যর্থতা কেবল সৃষ্টি হয়েছে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র পরিচালনায় নয়, এই ব্যর্থতা সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার কারণে।
তাই আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে সহযোগিতা করি, এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনি, সেইসাথে গণতন্ত্রচর্চার প্রতিষ্ঠান গুলোকে রক্ষা করার লক্ষ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সামিল হয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করি।
–ডালিয়া লাকুরিয়া