অস্ট্রেলিয়া আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করছে: জাতিসংঘ
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ নাউরুতে একদল আশ্রয়প্রার্থীকে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়ার পরও তাদের বন্দি করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। এর মাধ্যমে দেশটি মানবাধিকার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি। খবর আল জাজিরার।
কমিটি বলছে, অস্ট্রেলিয়া ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির আইনত বাধ্যতামূলক দুটি বিধান লঙ্ঘন করেছে – একটি নির্বিচারে আটকে রাখা এবং অন্যটি তাদের আদালতে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে কমিটির সদস্য মাহজুব এল হাইবা বলেন, আশ্রয় প্রক্রিয়ায় অন্য রাষ্ট্রে পাঠানোর সময় একটি রাষ্ট্র কারও মানবাধিকারের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারে না।
জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কাছে ২৫ জন শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীর আলাদা দুটি রেকর্ড রয়েছে, যারা নাউরুতে বছরের পর বছর নির্বিচারে আটক সহ্য করেছে। ১৮ জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞের প্যানেল দেখেছে, অস্ট্রেলিয়া যেসব শরণার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্করাও রয়েছে। তারা পর্যাপ্ত পানি এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীরা নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করে। সে সময়ও তাদের আটক করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বলছে, বন্দি অবস্থায় আশ্রয়প্রার্থীরা ওজন কমা, শারীরিক ক্ষতি হওয়া, কিডনির সমস্যা ও অনিদ্রাসহ নানা রোগশোকে ভোগেন। সেই সঙ্গে প্রায় সব শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
কমিটি অস্ট্রেলিয়াকে শরণার্থীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সরকার বলেছে, তারা কমিটির মতামত বিবেচনা করছে এবং যথাসময়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
২০১২ সালে প্রবর্তিত অস্ট্রেলিয়ার কঠোর নীতির অধীনে সরকার হাজার হাজার শরণার্থীকে ‘অফশোর প্রসেসিং’ কেন্দ্রগুলোতে পাঠিয়েছে। পাপুয়া নিউগিনির মানুস দ্বীপে নাউরুতে এবং বন্ধ করে দেওয়া দুটি ডিটেনশন সেন্টারে তাদের রাখা হয়।