খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দেয়া মতামত বেআইনি: খন্দকার মাহবুব
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দেয়া মতামত বেআইনি। কোনো অঘটন ঘটে গেলে তার দায়ভার সরকারের।’
রোববার (৯ মে) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে রোববার দুপুরে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় থেকে যে মত আসছে, তারা স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছেন, ৪০১ ধারায় সাজা স্থগিতকরে যে সুবিধাটি দেয়া হয়েছে, এটা দ্বিতীয় বার…তার সাজা মওকুফ করে তাকে বিদেশে পাঠানোর কোনো অবকাশ এই ৪০১–এ দ্বিতীয় বার নেই। এটা তারা জানিয়ে দিয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আইনে নির্বাহী কর্মকর্তাদের ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকার একটা ঠুনকো আদেশ দিয়ে বলেছেন, আইনের বিধান নেই। বিধান নেই এ কথাটা কোথায় আছে? ৪০১ ধারায় বিধান আছে কি নেইএটা তো বলা হয়নি। সরকার শুধু এটুকুই পারে, একটা কন্ডিশন দিতে পারে যে, হ্যাঁ, জটিল অসুখের জন্য মেডিকেল টিম ওপেনিয়ন (মতামত) দিয়েছে, বিদেশে চিকিৎসা দেয়া দরকার। চিকিৎসার পরে ফেরত আসতে হবে— এই শর্তটা যুক্ত করতেপারে। এছাড়া চিকিৎসার জন্য তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দেয়া হবে না, এটা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি ম্যাডাম খালেদা জিয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় নেত্রী, তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। সরকারের এইদায়ভারটা নেয়া উচিত হবে না। যদি একটা অঘটন ঘটে এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘আর একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, তার (খালেদা জিয়া) মামলা কিন্তু এখনো চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। বিচারিক আদালত তাকে সাজা দিয়েছে, আপিলটা পেন্ডিং আছে। পেন্ডিংয়ে এমনও হতে পারে তিনি আপিলে খালাস পেয়ে যাবেন। আমি এখনো মনে করি, সরকার এত বড় দায়ভার গ্রহণ করবেন না। তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া উচিত।’
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেছেন, আইনের কোনো বিধান নেই। কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে দেয়া হবে না। ৪০১ ধারাটা ফৌজদারি কার্যবিধির একটা ব্যাপক আইন। সেখানে নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। যেকোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাহী আদেশে মওকুফ করা যাবে, কমানো যাবে। উইথ কন্ডিশন অর্থাৎ শর্তসাপেক্ষে অথবা শর্তবিহীন।’
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করা হয়েছিল তার সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার জন্যে। সেই চিকিৎসার সুযোগ তিনি পাননি। এখন তার অবস্থা অত্যন্ত জটিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। সেক্ষেত্রে সরকার আইনের বিধান নেই— এই যে কথাটা বলছেন, ৪০১ ধারায় ফৌজদারি কার্যবিধির, এটা সঠিক না।’
এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ‘আইনের ব্যাখ্যাটা একটু মানবিক ভাবে করতে হবে এবং ওখানে কোনো খানে লেখা নেই— সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবে না। এরকম কোনো বক্তব্য নেই, এটা ওয়াইড পাওয়ার, ব্যাপক ক্ষমতা।’