বাবুনগরী-মামুনুল-ফয়জুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবেদন আজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য দেয়াসহ সংবিধান অবমাননার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেন জন্য আজ ৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।
গত ৭ ডিসেম্বর এ দুই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ নতুন এ দিন ধার্য করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালতে গত ৭ ডিসেম্বর মামলা দুটি দায়ের করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক ওরফে মশিউর মালেক এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ওইদিনই আদালত মামলা দুটি তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক বাদী হয়ে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক সংগঠনটির ঢাকা মহানগর শাখার সমাবেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গড়তে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে লাশের পর লাশ পড়বে। আবার শাপলা চত্বর হবে।’ মামুনুলের এমন বক্তব্যেল পর একটি শ্রেণি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে একের পর এক বক্তব্য দিচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২০বি, ১৫৩ ও ১২৪ক ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার এ মামলা করেন অ্যাডভোকেট মশিউর।
আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাদী হয়ে করা অপর মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তিন আসামি। জুনায়েদ বাবুনগরী ও মওলানা মামুনুলের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে সৈয়দ ফয়জুল করি গেন্ডারিয়ায় অনুসারীদের জড়ো করে তৌহিদি জনতার ব্যানারে সমাবেশ করে। সেই সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য মূর্তির সঙ্গে তুলনা করে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের উস্কানি দেয়া হয়।
মামলার অভিযোগে বিএমএ মিলনায়তনে মাওলানা মামুনুল হকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কোনও ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে। তার এ বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
গত ০৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান অবমাননার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এনে মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর এ আবেদন করা হয়েছিল।