দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেও ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পায়নি স্কুলছাত্রী
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওই স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমে দৌড় দেয়। কিন্তু অভিযুক্তরা সঙ্গে সঙ্গে তার পথ রোধ করে এবং মুখ চেপে ধরে। অবশেষে নিরুপায় হয়ে সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে হয় তাকে। এমন তথ্যই জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে আটক অভিযুক্ত তিনজনকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আজিমউদ্দিন জানান, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ধর্ষণের ঘটনায় আরেক সাবেক প্রেমিক রাইহানকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলো- ঘোড়াঘাট উপজেলার ঘুুঘুরা (ভোতরা পাড়া) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে নাইট গার্ড এবং ছদ্মবেশী প্রেমিক লাবু মিয়া (২৮), একই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম (৩৫), পৌর এলাকার বাউপুকুর গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি ওমর ফারুক (২১) এবং রাইহান (২৫) ঘোড়াঘাট উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামের শেখের ছেলে।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় ভিকটিমের বাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার মমিন, হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিথুন সরকার।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাউপুকুর গ্রামের এক শিক্ষার্থীর সাথে রাজু নামের এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনের মাঝে ফোনে কথোপকথনের বিষয়টি জানতে পারে লাবু নামে এক যুবক। রাজু কৌশলে ওই মেয়েটির ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাজু পরিচয়ে মেয়েটির সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। শনিবার রাত তিনটার দিকে শিক্ষার্থীর বাড়ির পাশে লিচু বাগানে তাকে দেখা করতে ডাকে। বাগানে গিয়ে সে প্রেমিক রাজুর পরিবর্তে অন্য এক যুবককে দেখে চিৎকার করে এবং দৌড়িয়ে বাড়িতে পালানোর চেষ্টা করলে লাবুর সাথে বাগানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া দুই সহযোগী ওমর ফারুক এবং আশরাফুল (১৭) তার মুখ চেপে ধরে। পরে লিচুর বাগানেই ওই তিনজন ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বাগানে ফেলে চলে যায়।
পরে রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির করে। এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের লিচুর বাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। তার মা মেয়ের মুখে ঘটনা শুনে মেয়েকে নিয়ে থানায় যায়।
ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে এর সাথে জড়িত চারজনকে আমরা আটক করেছি।
তিনি আরও জানান, রোববার সন্ধায় ভিকটিমকে নিয়ে তার মা থানায় এসে তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। পরে ঘোড়াঘাটের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার বিকেলে আরেকজনকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরপূর্বক সোমবার দিনাজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভিকটিমকের ডিএনএ টেস্ট করানোর জন্য দিনাজপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভিকটিমের পরিবারকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।