কোকো’র লাশ নিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রাজনৈতিক ‘স্ট্যান্ডবাজি’ করেছিলেন: আলাল
নিজের (হাসিনার) ছেলের চেয়েও বয়সে ছোট আরাফাত রহমান কোকোর লাশ নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি’ করতে ছাড় দেননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকো স্পোটিং ক্লাবের উদ্যোগে তার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কোকো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোর লাশ দেখতে নাকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান গিয়েছিলেন। তার মুখের সামনে নাকি দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তিনি তো বাহিরে ছিলেন, গেট তো আরও অনেক ভেতরে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সেখানে আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল ছিলো, এসএসএফ ছিলো। তাঁর নিরাপত্তা বাহিনী উপস্থিত ছিল। ক্যামেরাম্যান সাংবাদিকরাও ছিলেন। অনেক আগে থেকে তাঁর (হাসিনার) পরিকল্পনা রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি করার। তিনি সেটা করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘কোকোর মৃত্যুর কিছুদিন আগে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর ক্যান্টনমেন্টের নিবাস থেকে যেখানে তিনি তার স্বামীর সাথে বহু বছর থেকেছেন সেখান থেকে তাকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। ওনার গুলশান কার্যালয়ের সামনে ট্রাক ভর্তি বালু দিয়ে সবকিছু ব্লক করে রাখা হয়েছিল। খাবার, গ্যাস, বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেই মায়ের সামনে যখন তার আদরের ছোট ছেলের লাশ আসে, তখন কি তিনি চেতন থাকেন?’
যুবদলের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘কোকোর মৃত্যুসংবাদে শেখ হাসিনা সেখানে নাটক করতে গিয়েছিলেন। গণভবনে যাওয়ার আগেই টেলিভিশনে স্ক্রল এসেছিল বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বাসে অগ্নিসংযোগের দায়ে ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত, শেখ হাসিনা গুলশান থেকে গণভবনে পৌঁছাতে পারেনি, তার আগেই মামলাগুলো হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, এটা একটা রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি ছিল। নিজের ছেলের চেয়ে ছোট বয়সী একজনের লাশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি স্ট্যান্ডবাজি করতেও ছাড়েনি।’
‘মিথ্যা বচনে আওয়ামী লীগ শ্রেষ্ঠ’ মন্তব্য করে আলাল বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোনও রাজনৈতিক দল আছে কিনা জানা নেই, যারা মিথ্যাকে আর্ট হিসেবে পরিগণিত করতে পারে। সেই দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা সেটি নিখুঁতভাবে পারে।’
আলাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উন্নয়ন উন্নয়ন করতে করতে এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, আমেরিকার বিজ্ঞানীরা চাঁদে গিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে কিছুই দেখা যায় না সবকিছুই অন্ধকার, শুধু বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখা যায়। এ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো তিনি তার বাবা-মা এর পরিচয়ে চলতেন না। তিনি আলাদা একটা সত্তা নিয়ে শুধু ক্রীড়াঙ্গনের নানামুখি উন্নয়ন ভাবনায় ব্যস্ত থাকতেন।’
আরাফাত রহমান কোকোর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের একদিকে আরাফাত রহমান কোকোর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে, অন্যদিকে রাজনীতির পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনেও যেতে হবে।’
বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক ও কৃষকদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, কৃষকদলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন ও কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কোকোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন মাওলানা শাহ নেছারুল হক।