ধর্মঘটে উত্তরের ১৬ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ

0

১৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন আজ সোমবার অচল হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বাঘাবাড়ির বিপিসির তেল ডিপো।

সকাল থেকে পেট্রলপাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিকরা কোনো প্রকার জ্বালানি তেল উত্তোলন এবং উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় সরবরাহ করেনি। ফলে বিপিসির বাঘাবাড়ি ওয়েল ডিপোটি কর্মহীন হয়ে অচল হয়ে পড়েছে।

এর আগে রোববার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

এ বিষয়ে রাজশাহী পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অজেল উদ্দিন জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে তেলের কমিশন বৃদ্ধি, মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ, ট্যাংক-লরি শ্রমিকদের বীমাপ্রথা চালু, পরিবেশ অধিদফতরের লাইসেন্স বাতিল, বিএসটিআইয়ের বার্ষিক ট্যাক্স বাতিল, ট্যাংক-লরি চালকদের পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ১৫ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে।তিনি বলেন, আমাদের এ ন্যায্য দাবি দীর্ঘদিনেও পূরণ না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, সরবরাহ ও বিপণন বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছি। সরকার আমাদের এ দাবি বাস্তবায়ন করলেই আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে যাব।

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোজাম্মেল হক জানান, উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা থেকে সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। এসব পরিবহনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ লিটার পেট্রলের প্রয়োজন হয়।

এ পরিমাণ জ্বালানি তেলের সিংহভাগ বিপিসির বাঘাবাড়ি ওয়েল ডিপো থেকে সরবরাহ করা হয়। আর এ তেল সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ৮০০ ট্যাংক-লরি ও দুই শতাধিক পেট্রলপাম্প।

এ ছাড়া পার্বতীপুর, বালাসিঘাট ও চিলমারী থেকে চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ তেল সরবরাহ করা হয়। আমাদের দাবি আদায়ে উত্তরের সব ডিপো থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেল উত্তোলন ও সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া সব ট্যাংক-লরি ও পেট্রলপাম্পে জ্বালানি তেল বিপণন বন্ধ রয়েছে। এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ গুলো বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি ওয়েল ডিপোর ইনচার্জ ও যমুনা ওয়েল কোংয়ের ব্যবস্থাপক জাহিদ সরোয়ার বলেন, বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ১৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচির প্রথম দিনে বাঘাবাড়িসহ উত্তরের সব ডিপো খোলা রয়েছে। কিন্তু কোনো ডিলার বা পাম্প মালিক এ দিন তেল উত্তোলন করতে আসেনি। ফলে ডিপোতে কোনো কাজ হয়নি।

তবে সব পেট্রলপাম্প মালিক ও ডিলারদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ রয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের কোথাও এদিন এর কোনো প্রভাব পড়েনি। এ কর্মবিরতি দীর্ঘ হলে এক সপ্তাহ পর এর প্রভাব পড়তে পারে।

এ বিষয়ে পরিবহন মালিক আবদুস সবুর ও বাদল খন্দকার জানান, এ দিন তাদের ট্যাংকিতে ফুল তেল থাকায় তারা ভালোভাবেই গাড়ি চালাতে পেরেছেন। আগামী দিনেও পেট্রলপাম্প বন্ধ থাকলে তারা আর গাড়ি চালাতে পারবেন না।

এদিকে খুচরা বিক্রেতা আব্দুল আলিম জানান, সরবরাহ না থাকায় খুচরাবাজারে পেট্রলের দাম লিটারে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বিষয়ে মোটর বাইকচালক আবদুল কুদ্দস, রাজিব আহমেদ জাকির হোসেন জানান, পেট্রলপাম্প বন্ধের কারণে খুচরা বিক্রেতারা লিটারপ্রতি ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছে। কোথাও কোথাও সরবরাহ না থাকার অজুহাতে পেট্রলের কৃত্রিম সংকটও দেখা দিয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com