সুদে টাকা নিয়ে কেনা হলো ভর্তি ফরম; কিন্তু ভর্তি?
অভাবের কাছে হার না মেনে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার জুয়েল রানা। ২০১৮ সালে এইচএসসি পাস করে এবারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘বি’ ইউনিট এ অংশগ্রহণ করেন। এতে তিনি মেধাতালিকায় অষ্টম হয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ পেয়েছেন। কিন্তু এখন টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না জুয়েল। ইতিপূর্বে সুদের বিনিময়ে টাকা নিয়ে ফরম তুলতে হয়েছে তাকে এবং প্রতিহাজারে মাসে দিতে হবে ২০০ টাকা সুদ।
ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনের সংসারে দিনের পর দিন সংগ্রাম করে আসতে হয়েছে এই উচ্চশিক্ষার পথে। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা মিরগঞ্জ ইউনিয়নের খ্যাড়কাটা গ্রামে দিনমজুর আমিনুর রহমান ও গৃহিণী কুলসুম বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন জুয়েল রানা। বসতবাড়ি ছাড়া জায়গা-জমি কিছু নেই, নেই তেমন কোনো আয়ের উৎস। অভাবের সাথেই গড়ে উঠেছে তার জীবন। তার বাবা আমিনুর রহমান অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে সংসার চালান। জুয়েল পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে বাবা-মার তৃতীয় সন্তান। দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে পিএসি ও জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। বাবা-মা এবং ছোট ভাই রাসেলের অনুপ্রেরণায় তার পড়ালেখার এগিয়ে যাওয়া।
খ্যাড়কাটা ও তার কিছু পার্শবর্তী গ্রামের মধ্যে জুয়েল রানাই প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেল। তার বাবা-মা বলেন, আমরা অনেক গরিব মানুষ। সে রকম রোজগার করতে পারি না। দিনে কোনোরকম খেয়ে-পরে বেঁচে আছি। এর আগে ভর্তি পরীক্ষার ফরম তোলার জন্য সুদে ৭ হাজার টাকা ঋণ করি। এখন আবার ভর্তির জন্য ১০ হাজার মোটা অঙ্কের টাকা আমরা কোথা থেকে পাব? আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ আমার ছেলেকে যদি ভর্তি করার জন্য কেউ সাহায্য করেন তাহলে আমার ছেলে দেশের অনেক বড় জায়গায় যেতে পারবে।