হাইকোর্টেও জামিন পেলেন না ডা. সাবরিনা
নভেল করোনা ভাইরাস পরীক্ষা না করে মনগড়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগের মামলায় চার্জশিটের সঙ্গে যুক্ত থাকা নথি জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম।
বিচারিক আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে থাকা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য আগামী ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে গত ২০ আগস্ট বিচারিক আদালতে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা, তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। ওইদিন আসামিদের উপস্থিতিতে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠন করেন।
সাবরিনা-আরিফ ছাড়াও মামলার অপর ৬ আসামি হলেন- শফিকুল ইসলাম রোমিও, জেবুন্নেসা, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী ও বিপ্লব দাস।
গত ৭ আগস্ট ঢাকার মুখ মহানগর হাকিম জুলফিকার হায়াদ মামলার চার্জশিট দেখে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে বদলি করেন। ওইদিনই আদালত সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত দিনে অভিযোগ গঠনের জন্য ২০ আগস্ট দিন ঠিক করেন আদালত।
গত ৫ আগস্ট মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা মেলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট জিআর শাখায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের নামে চার্জশিট জমা দেন।
চার্জশিটে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কম্পিউটারে ১ হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট জব্দের কথা বলা হয়।
এরমধ্যে গত ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
মামলার তদন্তকালে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনাকে গত ১২ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগীয় উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওইদিনই তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। ১৩ জুলাই তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ১৭ জুলাই আরও ২ দিনের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। দুই দফা রিমান্ড শেষে ২০ জুলাই ডা. সাবরিনাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
ডা. সাবরিনা সরকারি হাসপাতাল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চাকরি করার পরও তিনি জেকেজির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরী ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী।
করোনার রিপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই ওই দম্পত্তিসহ চার্জশিটভুক্ত সব আসামি কারাগারে রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে সাবরিনা ও আরিফুলকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মূলহোতা এবং বাকি ৬ আসামিকে সহযোগী হিসেবে এজাহারভুক্ত করা হয়।