‘লুটপাটের সুযোগ করে দিতে কলকারখানা বিরাষ্ট্রীয়করণ করা হচ্ছে’
ব্যক্তি মালিকদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে কলকারখানা বিরাষ্ট্রীয়করণ করা হচ্ছে, যা সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলিস্তানে জিপিও ভবনের বিপরীতে জাসদ গলিতে স্কপ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ মন্তব্য করেন। বিরাষ্ট্রীয়করণ বন্ধ করে বন্ধ পাটকল-চিনিকলসগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু ও আধুনিকায়ন, ন্যূনতম শ্রমিক মজুরি ঘোষণা, শ্রমিক ছাঁটাইসহ ৯ দফা দাবির সমর্থনে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছে সংগঠনটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনাকালে যখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব সব নাগরিকের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ সময়েই রাষ্ট্রীয় পাটকল-চিনিকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিক এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষকে কর্মহীন করে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়ে রাষ্ট্র খুব নগ্নভাবে ধনীদের স্বার্থ রক্ষাকারী যন্ত্র হিসেবে নিজের পরিচয় উম্মোচিত করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার করোনা মোকাবিলায় যে এক লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার ৮০ শতাংশের বেশি টাকা মালিকদের সুবিধাই ব্যবহার হয়েছে বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে। অথচ স্কপের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব অনুসারে মাত্র এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাটকলগুলোকে আধুনিকায়ন করা সম্ভব। কিন্তু এর পরিবর্তে দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের পরার্মশে লোকসানের অভিযোগ তুলে তার দায় শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো বন্ধ করে দেয়া হল।
যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন, পুরাতন ঋণ ও ঋণের সুদ মওকুফ এবং পরিচালনা প্রক্রিয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর দুর্নীতি বন্ধ করে চিনিকলগুলোকে লাভজনক করা সম্ভব। কিন্তু কলকারখানায় রাষ্ট্র কয়েকশত কোটি টাকা বরাদ্দ করেনি। কিন্তু বেসরকারি শিল্প মালিকদের হাজার-হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন বা মওকুফ করেছে। মুখে অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর কথা বলা হলেও সরকারি কর্মচারীদের প্রায় দশগুণ মজুরি বৈষম্যের ২০ গ্রেডের বেতন স্কেলের মাধ্যমে আর ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্পের মজুরি নির্ধারণে আইনি কোনো মানদণ্ড অনুসরণ না করে রাষ্ট্র সমাজের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি করছে- যোগ করেন বক্তারা।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম।