দেশে একসঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রাজনৈতিক মহামারি চলছে: রিজভী

0

দেশে একদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অন্যদিকে রাজনৈতিক মহামারি চলছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘কথা বলা যায় না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না। কথা বললেই মিথ্যা মামলা দিয়ে দিবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে দেশ চলতে পারে না।’

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গার্ডেন রোড এলাকায় ২৬ নং ওয়ার্ডে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা আজিজুর রহমান মুসাব্বির এর উদ্যোগে দুস্থ ও অসহায়দের শীতবস্ত্র বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘জনগণের পাশে থেকে আমাদেরকে আরও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে কারও জীবনের নিরাপত্তা নেই। কারও সন্তানের কোনও নিরাপত্তা নেই। যেকোনও সময় যে কেউ গুম হতে পারে, যেকোন সময় যে কেউ বিচারবহির্ভূত হত্যা হতে পারে। একটা ছেলে মিছিল করলে তাকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করবে কেউ কিছুই বলবে না। সীমান্তে আমাদের লোক মারা যায় অথচ আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন আমাদের দেশের দুষ্ট ছেলেরা অস্ত্র নিয়ে যায় বলে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষকেই ধিক্কার দিচ্ছে অথচ যারা গুলি করে মারে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। এই নতজানু সরকার ক্ষমতায় থাকলে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে না সার্বভৌমত্ব থাকবে না আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না।’

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃসময় পার করছি আমরা। কঠিন দুঃসময়। কথা বলা যায় না। কোনও সমাবেশ-মিটিং করা যায় না। একদিকে মিথ্যা মামলা গ্রেফতার, আর না হলে হামলা, এর মধ্যেই বিএনপি নেতাকর্মীদের জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তারপরেও কিন্তু নেতাকর্মীরা বসে নেই। আমাদের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের পাশে আছে। অসহায় মানুষের পাশে আছে নিরন্ন এবং আর্তমানবতার সেবায় তারা নিয়োজিত আছেন।’

রিজভী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে গোটা জাতি থর থর করে কাঁপছে। হাসপাতালে সিট নাই, অক্সিজেন নাই। আইসিইউতে সিট নাই। মফস্বল গুলোতে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থা। কারও যদি করোনা সন্দেহ হয়, সেটি টেস্ট করে রেজাল্ট বের করতে সময় লাগে ৪৮ ঘণ্টা। এর মধ্যে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। রোগীর জন্য যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দরকার সেটার কোনও ব্যবস্থা নাই। আজকে ঢাকা শহরের কোনও হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই। 

মানুষ কাতরাচ্ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে, হাসপাতাল থেকে ফিরে আসছে। মুমূর্ষ অবস্থায় তারপরে ধুঁকতে ধুঁকতে জীবন চলে যাচ্ছে। ৭০ শতাংশ হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনও সুবিধা নেই। করোনা রোগীদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে অক্সিজেন। মানুষ কেন মারা যাবে না, প্রতিদিন শুধু মৃত্যুর মিছিল, এরকম একটা দুঃসময়ের মধ্যে আমাদেরকে জীবনযাপন করতে হচ্ছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বিজয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসকে আমরা রাজনীতিকরণ করতে চাইনি। আমরা যেটা চাই সেটা গোটা জাতির অর্জন। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পশ্চিমাদের কাছ থেকে এদেশের দামাল ছেলেরা যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে অনেক ত্যাগ তিতীক্ষা স্বীকার করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। এটা কোন দলেরও একক কৃতিত্ব নয়, কোন ব্যক্তির একক কৃতিত্ব নয়। 

আমরা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ছোট করছি না কিন্তু তারা যখন ওই ক্রান্তিকালে ওই দুঃসময়ে যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই মেজর জিয়াউর রহমানকে ছোট করেন, তখন আমরা ব্যথিত হই জনগণ ব্যথিত হয়। আমরা আজকে সেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দল করি আমাদের আদর্শ হচ্ছে অসহায় নিরন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো।’

শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, স্বেচ্ছাসেবক সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুর রহমান মুসাব্বির প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com