যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই ভুগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনা নির্মাণ করছে ইরান

0

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বিরোধ এখন চরম পর্যায়ে। তারমধ্যেই, ফোর্দো অঞ্চলে একটি ভুগর্গভস্থ পরমাণু স্থাপনা পুনরায় নির্মাণের কাজ শুরু করেছে দেশটি। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা- এপি’র সংগ্রহ করা কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে স্থাপনাটির সন্ধান মেলে। 

এদিকে ফোর্দোর অবকাঠামোয় নতুন করে নির্মাণকাজে শুরু হওয়ার বিষয়টি ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। ২০০৯ সালে প্রথম পশ্চিমা দুনিয়া এই স্থাপনা তৈরির উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছিল। তারপর অব্যাহত চাপের মুখে বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। তারপর থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল।

স্যাটেলাইট কোম্পানি মাক্সার টেকনোলজির মাধ্যমে উপগ্রহ চিত্র পায় এপি। ওই সূত্রে জানা গেছে, শিয়া ধর্মের পবিত্র কোম নগরী থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফোর্দোতে গত সেপ্টেম্বরের শেষদিকে পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হয়।  

এরপর ১১ ডিসেম্বর তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মাটির নিচে স্থাপনা নির্মাণে ভিত্তি হিসাবে বেশকিছু পিলারও বসানো হয়েছে। সাধারণত ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় অবকাঠামোকে স্থিতিশীল রাখতেই এমন পিলার বসানো হয়। 

স্থাপনাটি বর্তমানে কী কাজে ব্যবহারের জন্য আবার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং ইরান বিরোধী উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর সন্দেহ ইরান একে পরমাণু গবেষণায় ব্যবহার করবে। আর তাছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সময়ে স্থাপনার কাজ পুনরায় শুরু করা হলো। তাই একে কেন্দ্র করে উত্তেজনার নতুন স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যে। 

জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করার আগেই ইরানের এ পদক্ষেপ শান্তি চেষ্টা ব্যাহত করবে, বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এছাড়া, দেশটি নাতাঞ্জে অবস্থিত তাদের একটি বৃহৎ পমানু স্থাপনা সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে এক রহস্যজনক বিস্ফোরণে স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তেহরান একে পশ্চিমাদের অন্তর্ঘাতমূলক হামলা বলেই উল্লেখ করে।

ফোর্দোয় নির্মাণকাজ নিয়ে মিডলবেরি ইনস্টিটিউড অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিশেষজ্ঞ জেফ্রি লুইস বলেন, ‘এই স্থাপনায় আসা যেকোন পরিবর্তনের উপর অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখতে হবে। তার মাধ্যমেই দেশটির পরমাণু কর্মসুচি কোন পথে এগোচ্ছে সে বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।’ 

এব্যাপারে জানতে এপি’র পক্ষ থেকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু, তাদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ইরানের পরমাণু কর্মসুচির উপর নজর রাখা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) পরিদর্শকেরাও তাৎক্ষনিক মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। ফোর্দোর স্থাপনার ব্যাপারে ইরান আগে থেকেই জানিয়েছিল কিনা- তা এখনও প্রকাশ করেনি আইএইএ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com