নাক-কান-গলার ডাক্তার করলেন সিজার, ফলে প্রসূতি এখন মৃত্যুশয্যায়
যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে দেশ ক্লিনিকে ভুল অস্ত্রোপচারের অভিযোগ উঠেছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ডা. শাহীন রেজা নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক হয়েও নিজেকে গাইনি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দেশ ক্লিনিকে এক প্রসূতিকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন এবং অপারেশনের সময় ওই রোগীর খাদ্য ও মূত্রনালী কেটে ফেলেন। ফলে ওই প্রসূতি এখন মৃত্যুশয্যায়।
এ ঘটনায় রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই ক্লিনেকে রোগীর স্বজনরা গিয়ে ডাক্তার শাহীন রেজাকে অপারেশন কক্ষে আটকে রেখে বিচার দাবি করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
রোগীর স্বজনরা জানান, ২৯ মে বাঘারপাড়া উপজেলার চানপুর গ্রামের মইনুল ইসলামের প্রসূতি স্ত্রী ডলি খাতুন যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। এ সময় সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যশোর জেনারেল হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের ডা. শাহীন রেজা তার সিজার করান। ওই প্রসূতি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা শেষে রোগীকে নিয়ে স্বজনরা বাড়িতে চলে যান। কিছুদিন পর রোগীর অবস্থার অবনিত হয়। রোগীর স্বজনরা তাকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে জানা যায়, রোগী অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে। তার খাদ্য ও মূত্রনালী সিজারের সময় কেটে ফেলে আবার সেলাই দিয়ে ঠিক করার চেষ্টা করা হয়েছে। যার ফলে মূত্রনালী দিয়ে মল বের হচ্ছে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অপারেশনের সময় ডাক্তার শাহীন রেজা নিজেকে গাইনি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীর অপারেশন করেছেন। পরে রোগীর সমস্যা দেখা দিলে খোঁজ খবর নিয়ে তারা জানতে পারেন, ওই ডাক্তার সদর হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের। তিনি কোনো গাইনি ডাক্তার নন। ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনদের সাথে প্রতারণা করেছেন অভিযুক্ত ওই ডাক্তার।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তার শাহীন রেজা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন। তিনি কোনো সার্জারি ডাক্তার নন। কিন্তু শহরের ৪ থেকে ৫টি ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের সার্জরি করে থাকেন। ১৫ দিন আগেও তিনি একটি ক্লিনিকে এক রোগীর পিত্তথলির পাথর অপারেশন করে বির্তকে পড়েন। ওই রোগীও অপচিকিৎসার শিকার হয়। বর্তমানে রোগীটি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত ডাক্তার শাহীন রেজা বলেন, আমি গাইনি বা সার্জরি বিভাগের ডাক্তার নন এটা সত্যি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে কর্মরত আছি। এমবিবিএস ডাক্তার সকল চিকিৎসা ও অপারেশন করতে পারে। রোগীর স্বজনরা আগে কোনো অভিযোগ করেনি। একটি চক্র আমাকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে। আর রোগীর কি সমস্যা হয়েছে আমি তা অবগত নই। কখনো রোগীর স্বজনরা কোনো অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসেনি। রোগীর চিকিৎসায় কোনো ভুল হয়েছে কিনা যা জনতে হলে আগে আমাকে রোগীর কাগজপত্র দেখতে হবে।