ভাস্কর্য ভাঙচুর: খালেদা-তারেক-ফখরুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ‘হুকুমদাতা’ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একই মামলায় ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ায় হেফাজত ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিমকেও আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলা করেছেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের এক আলোচনা সভায় হেফাজত নেতা মামুনুল হক বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে কোনও ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গড়তে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে লাশের পর লাশ পড়বে। আবার শাপলা চত্বর হবে।’
এছাড়াও গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘মদিনার সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনও প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। কোনও ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে। তিনিও আরেকটি শাপলা চত্বরের পরিস্থিতি তৈরির হুমকি দেন।
অপরদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামি আন্দোলনের এক জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ফয়জুল করিম বলেন, বাংলাদেশে যদি কোনও ভাস্কর্য তৈরি করা হয় তাহলে সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে। প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্বরে জমায়েত করা হবে।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এর আগেও বেগম জিয়ার নেতৃত্বে শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও। তারপর বাবুনগরীর হুকুমে হেফাজত ইসলামের জঙ্গিবাদীরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দেন। স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থি স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়প্রতিপন্ন করছে।
মামলার বাদীর অভিযোগ, যে পিতার (শেখ মুজিব) নেতৃত্বে এ দেশের জন্ম হয়েছে, সেই স্বাধীন দেশে পিতার হাত ভেঙে এই বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত ইসলাম, ইসলামিক শাসনতন্ত্র এসব ইসলামিক সংগঠনগুলো এ দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে দেশকে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করে। স্বাধীনতার স্থাপক জাতির পিতার নাম এ দেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে চায়। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০/৫০৬/১০৯ ও ৪২৭ ধারায় আসামি করে, অপরাধ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করছি।