ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

0

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রলীগ নেতার আপন ছোট ভাই কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবিদ হোসেন তানভীর এ অভিযোগ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন তার আরেক বড় ভাই নাহিদ ও তার চাচাতো ভাই হিমেল।

সংবাদ সম্মেলনে তানভীর বলেন, সাত ভাইয়ের মধ্যে রাহিদ দ্বিতীয়। পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান হওয়ায় রাহিদ তার বাবার সকল অর্থ সম্পদের দেখাশোনা করতেন। শহরের বাসা বিক্রির এক কোটি ৫০ লাখ টাকার মধ্যে রাহিদ ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। পরে তিনি আত্মসাতের টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। একপর্যায়ে তার কাছে টাকার হিসাব চাইলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। পরে হিসাব চাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত থেকে নিজেদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলন করেন মৃত ডা: রফিকুন নাহার পারভিনের মেয়ে আসফিয়া শাহরিন আচঁল (২৯) ও তার ছোট ভাই ফাহিম আজাদ আপন। এ সময় তাদের লিগ্যাল অভিভাবক তাদের বৃদ্ধা নানী ও তাদের মামা শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ উপস্থিত ছিলেন।

তখন আচঁল স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তাদের নানা আব্দুস সালাম ও আওয়ামীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু শহিদ মো: আব্দুল্লাহসহ তাদের পরিবারের অন্যরা প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। একপর্যায়ে তাদের ওপর লাঠি সোটা নিয়ে হামলার চেষ্টা চালান।

এ ব্যাপারে তানভীর বলেন, তার ভাই রাহিদের প্ররোচনায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানীকর অভিযোগ করেছেন তার ভাগ্নি আচঁল। তিনি জানতে চান আচঁল আড়াই কোটি টাকার মালিক হওয়ার পর সরকারকে কী পরিমাণ কর দিয়েছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তাদের এই অর্থের হদিস বের করতে অনুরোধ করেন।

তানভীর জানান, উপজেলার রূপশপুর মৌজায় বারিধারা আবাসিক এলাকায় তাদের দাদা প্রায় ১১ একর সম্পদ রেখে যান। দেশের প্রচলিত আইন ও ইসলামী শরিয়হ অনুযায়ী এসব সম্পদ সুষ্ঠু বণ্টন না হওয়া নিয়ে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন কার্যালয়ে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে একটি সালিশি বৈঠক হয়। সালিশে তাদের বাবা ও চাচার কেনা সম্পত্তির ১৫৭৮ নং দলিল তাং-২৮/০৮/৬৯ এর ১২ শতক ভূমির মূল্য বাবদ তাদের ভাগ্নি আসফিয়া শাহরিন আচঁলকে ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধের রায় হয়। কিন্তু আচঁল টাকা না দিয়ে উল্টা তাদের নামে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য উপস্থাপন করে সমাজে তাদের পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ন করছেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা আরো অভিযোগ করেন, তার ভাই রাহিদ টাকার লোভে আচঁলের পিছু নিয়েছেন। আচঁল তার স্বার্থ হাসিল করার জন্য তার রাহিদকে হাতে রাখেন। মা-বাবা ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে তারা একত্রে বসবাস করলেও তার ভাই রাহিদের অপকর্মের কারণে পরিবার ও সমাজ থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোওয়ার হোসেন রাহিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ভাই তানভীর ভুয়া, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ করেছেন। অথচ তিনি পৌর প্রেসক্লাব খুলে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন। হিমেল টমটম থেকে চাঁদা তুলেন।

পরিবারের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পুরান বাসা বিক্রির টাকার বিষয়ে তার সাথে কোনো লেনদেন হয়নি। তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তার বাবা ও তানভীর সব লেনদেন করেছেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com