জাতীয় স্থায়ীকমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব

0

রোববার, নভেম্বর ২৯, ২০২০ তারিখ বিকাল ৪.৩০ মিনিটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য যথাক্রমে—

১. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২. ব্যরিষ্টার মওদুদ আহমেদ ৩. ব্যরিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার ৪. মির্জা আব্বাস ৫. বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ৬. ড. আব্দুল মঈন খান ৭. জনাব নজরুল ইসলাম খান ৮. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৯. আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ১০. বেগম সেলিমা রহমান ১১. জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরে নিন্মে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়:-

১। সভায় বিগত ২১ নভেম্বর ২০২০ সালে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।

২। যদিও বর্তমানে দেশে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূলে নয় তথাপি স্থানীয় পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে, নির্বাচন কমিশন কতৃক ঘোষিত ২৫ টি পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৩। ক) গত ২ সপ্তাহে বাংলাদেশে তথ্য সারা বিশে^ কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ভয়াবহ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় মত প্রকাশ করা হয় যে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকেই সরকারের ক্ষমাহীন উদাসীনতা ও ব্যর্থতার কারনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমনের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও পরীক্ষার হার অত্যন্ত সীমিত। পরিকল্পিত ভাবে সংখ্যা কম দেখানোার ফলে সঠিক চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে না। অন্যদিকে হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসার সুযোগ অত্যান্ত সীমিত থাকায় মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ ও ভেন্টিলেটর সহ আই.সি.ইউ শয্যার সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হওয়াতে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। ঢাকার বাইরেও মহানগর, জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে আই.সি.ইউ বেড নেই বললেই চলে। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সরকার প্রায় ১ বৎসর সময় পেয়েও সরকারি হাসপাতল গুলোতে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যার্থ হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, উদাসীনতা, দূর্নীতি এবং জনগণের জীবনের মূল্য না দেওয়ায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সভা মনে করে। সভা মনে করে অবিলম্বে জরুরী ভিত্তিতে জেলা, উপজেলা এবং ঢাকাসহ সকল মহানগর পর্যায়ে কোভিড-১৯ সহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে।

খ) কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রস্তুত ইতি মধ্যেই কয়েকটি দেশে চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। অনেক দেশের সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেছে। দূর্ভাগ্য জনক ভাবে বাংলাদেশের দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকার এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তা স্পষ্টভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরছে না। বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ বিভ্রান্তি মূলক তথ্য তুলে ধরছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অযোগ্যতার কারনে জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সভা মনে করে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং বিতরণের বাস্তব সম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে না পারলে জনগণ উপকৃত হবে না। উপরন্ত ব্যাপক দূর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করবে। যেহেতু যথাযথ তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই হেতু আগে থেকেই এই বিষয়ে সকল পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।সুষ্ঠু বিতরণের বিষয়টিও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ব। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের জন্য ৩২ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ প্রয়োজন হবে। সভা মনে করে বর্তমানে দূর্নীতি গ্রস্থ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতরের পক্ষে এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে পালন করা সম্ভব নয় বলে এই কাজে সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা গুলোকে দায়িত্ব প্রদান করা উচিত। বেশ কয়েকটি উন্নত দেশেও সশস্ত্র বাহিনীকে কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে। সভা অবিলম্বে ভ্যাকসিন সংগ্রহের সংরক্ষণ ও বিতরণের স্বচ্ছতা, কঠোর নজরদারী এবং জবাবদিহিতার ব্যবস্থা সম্বলিত পরিকল্পনা জনগণের সামনে উপস্থাপনের দাবী জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ইতিমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের দাবীকৃত সংগৃহীত ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বিতরণের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছে।

৪। সাম্প্রতিক কালে ঢাকা মহানগরে অনেক গুলো বস্তিতে রহস্য জনক ভাবে অগ্নি কান্ড সংঘটিত হয়েছে। ফলে অসংখ্য বিত্তহীন কর্মজীবী মানুষ বা¯ুÍহীন হয়ে পড়েছে। মুক্ত আকাশের নীচে খাদ্যাভাবে অসহনীয় জীবন কাটাচ্ছে। সভা মনে করে সরকারের মদদপুষ্ট প্রভাবশালী মহলের সরকারী জমি দখলের অসৎ উদ্দ্যেশেই এই সব অগ্নিকান্ড ঘটানো হচ্ছে। সভা অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং তাদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছে এবং এই সব রহস্য জনক অগ্নিকান্ডের সঠিক কারন, জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছে।

৫। সভায় সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়।

৬। সভা শেষে সভাপতি উপস্থিত সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার মুলতবী ঘোষণা করেন। (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) মহাসচিব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com