অর্থপাচারকারীরা ‘দেশ-জাতির শত্রু, জাতীয় বেঈমান’, তথ্য চেয়ে রুল
বিদেশে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলাা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ ৭ জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
রবিবার (২২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, ‘অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আমরা সম্মিলিতভাবে দেশের জন্য কাজ করতে চাই। অর্থপাচারকারীরা দেশ ও জাতির শত্রু। তারা জাতীয় বেইমান। এদের ধরতে হবে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক রুল জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘যারা বিদেশে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করেছেন তাদের যাবতীয় কার্যক্রমকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ ৭ জনকে রুলে বিবাদী করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিনে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, জনকণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ কয়েকটি পত্রিকার প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।’
আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন।
এ সময়ের মধ্যে যারা অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার করে অর্ডার বাড়ি-গাড়ি সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তাদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বক্তব্য দেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা নয়, বিদেশে বেশি অর্থপাচার করেন সরকারি কর্মচারীরা। আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে। আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এছাড়া কিছু আছেন আমাদের তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি।’
এরপর দেশের বেশ কিছু জাতীয় দৈনিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সেসব প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অর্থপাচারকারীদের যাবতীয় তথ্য চেয়ে স্ব-প্রণোদিত হয়ে আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।