৬ মাসের সাজার ভয়ে আত্মগোপনে ১৬ বছর
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলামের (৪৫) নামে ২০০৪ সালে চুরির মামলা হয়। সেই মামলায় আদালত তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। সাজার ভয়ে নজরুল ইসলাম এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘ ১৬ বছর আত্মগোপনে থাকার পর রোববার বিকেলে তিনি স্বেচ্ছায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানায় আত্মসমর্পণ করেন। আজ সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. নজরুল ইসলাম নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম শমশ্চুড়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ জানায়, চুরির মামলায় ২০০৪ সালে নজরুল ইসলামকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজার ভয়ে তিনি মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তান রেখে ফেনীতে আত্মগোপনে চলে যান। সেখানে তিনি দিনমজুরির কাজ করতেন। দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন সেখানে। সেই সংসারে ১৪ বছর বয়সের এক কন্যাসন্তান আছে তাঁর।
নজরুল ইসলামের ভাষ্য, জেল খাটার ভয়ে এলাকা ছেড়ে ১৬ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সাজার বিষয়টা সব সময় তাঁকে কষ্ট দিত। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানের জন্য সব সময় মন কাঁদলেও ভয়ে তিনি এত দিন এলাকায় আসার সাহস পাননি।
পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) হাসিবুল হাসান গণমাধ্যমকেকে বলেন, ‘যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি পলাতক আছেন, আমরা তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের সহযোগিতার কথা শুনে তাঁরা সাহস পাচ্ছেন। মাত্র ছয় মাসের সাজার জন্য জীবনের ১৬টি বছর নষ্ট করেছেন নজরুল। বিষয়টি নজরুলের বাবা বুঝতে পেরে তাঁর ছেলেকে থানায় আত্মসমর্পণ করিয়েছেন।’
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বলেন, ছয় মাস সাজা বলতে তো সাড়ে চার মাসের মতো সাজা হয়। কিন্তু শুধু বোঝার ভুলের জন্য ১৬টি বছর পালিয়ে বেরিয়েছেন নজরুল ইসলাম। পুলিশ তাঁর পরিবারকে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় নজরুল ১৬ পর বছর স্বেচ্ছায় এসে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হবে।