প্রধানমন্ত্রী মোদির অগ্নিপরীক্ষা আজ, পাল্টে যেতে পারে ভারতের রাজনীতির গতিপথ

0

এক্সিট পোলের পূর্বাভাস মিলবে? নাকি মোদি ম্যাজিক এখনও অক্ষুণ্ণ? জানা যাবে আজ। মঙ্গলবার ভারতের বিহারে ভাগ্য নির্ধারণ হবে নীতীশ কুমার, তেজস্বী যাদব ও নরেন্দ্র মোদির। ২৪৩ আসনের বিধানসভা ভোটে কমবেশি প্রতিটি সমীক্ষক সংস্থাই এগিয়ে রেখেছে আরজেডি, কংগ্রেস ও বাম দলগুলির মহাজোটকে। কয়েকটি এক্সিট পোলের পূর্বাভাস বিজেপি-জেডি(ইউ) জোটকে নামিয়ে এনেছে এক শ’রও নীচে। আবার কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষা বলছে, ভোটের ফল হবে ত্রিশঙ্কু। অথচ নির্বাচনের আগে প্রতিটি জনমত সমীক্ষা এগিয়ে রেখেছিল বিজেপি জোটকেই। কয়েকদিনের ব্যবধানে উল্টে গিয়েছে সেই ছবি।

সবথেকে দুশ্চিন্তায় একজনই—নীতীশ কুমার। বারবার জোটবদল করে সেই ২০০৫ সাল থেকে তিনি লাগাতার মুখ্যমন্ত্রীর পদে। এক্সিট পোলের ফল বাস্তবে প্রতিফলিত হলে, ‘সুশাসনবাবু’ হিসেবে পরিচিত নীতীশের রাজনৈতিক ইনিংস একপ্রকার সমাপ্ত হবে। বিহারে উদয় হবে নতুন যুগের তরুণ নেতৃত্বের। মাত্র ৩১ বছর বয়সে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী কি সত্যি হতে পারবেন লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী? উত্তর মিলবে আজই। প্রত্যক্ষভাবে সংযোগ না থাকলেও এই ভোট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অগ্নিপরীক্ষা। কারণ, বিহারের জয়-পরাজয় তাঁর এবং দলের ভবিষ্যতের গতিপ্রকৃতি স্থির করে দেবে। যে বিজেপি তথা এনডিএ কয়েক বছর আগেও ভারতের মানচিত্রে অপ্রতিরোধ্য এবং উজ্জ্বলতম অবস্থানে ছিল, তার জৌলুস কমছে।

এখন উত্তর ভারতে একমাত্র উত্তরপ্রদেশ, দক্ষিণে শুধু কর্ণাটক, পশ্চিমে গুজরাত, মধ্য ভারতে মধ্যপ্রদেশ এবং পূর্বে বিহার তাদের হাতে। এছাড়া হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা ও আসাম রয়েছে। কিন্তু বৃহৎ রাজ্যগুলিতে গেরুয়ার চিহ্ন মলিন। মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচনের ফল ঠিক করবে, এই রাজ্যে বিজেপি তাদের ভাঙাগড়ার সরকার কায়েম রাখতে পারবে কি না। এখন বিহার হাতছাড়া হলে, হিন্দি বলয়ের সর্ববৃহৎ দল বিজেপির কাছে সেটা হবে চরম ধাক্কা। আর মোদির নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠতে বাধ্য। তাই তিনিও অবশ্যই নার্ভাস বিহারের ফলাফল নিয়ে। কারণ, এখানে জয়ী হলে তাঁর বাংলা দখলের আহ্বানের তীব্রতা আরও বাড়বে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মনোবলও বাড়বে বহুগুণ। কিন্তু বিহারে হারলে প্রতিবেশী রাজ্যে বার্তা যাবে— বিজেপি দেশজুড়েই প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। আরো আগ্রাসী হয়ে ময়দানে নামবেন মমতা ব্যানার্জি।

আরো এক তরুণ তুর্কির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে এই নির্বাচনে। চিরাগ পাসোয়ান। পিতা প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের দলের ভার নিয়েই তিনি পরীক্ষার সামনে। এনডিএ ছেড়ে এবার বিহারে একাই লড়েছেন। নীতীশ কুমারের রাজনীতির কেরিয়ার শেষ করে তার লক্ষ্য আগামী দিনে বিহারে তেজস্বীর প্রধান প্রতিপক্ষ এবং বিজেপির প্রধান জোটসঙ্গী হওয়া। পারবেন তিনি? নাকি স্রেফ ‘ভোট কাটা পার্টি’ হিসেবেই রয়ে যাবে লোক জনশক্তি পার্টি?

যদিও আসল প্রশ্ন অন্য। বিহার থেকেই বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়ার থমকে যাওয়া শুরু? নাকি আজও অব্যাহত মোদি-মিথ? আর কয়েক ঘণ্টা পরেই জানা যাবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com