বৃদ্ধের কোটি টাকার বাড়ি দখল করলেন আ.লীগ নেতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. নূরুল হক ভূইয়ার বিরুদ্ধে এক প্রতিবন্ধী পরিবারের বাড়ি ২০ বছর ধরে দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে আখাউড়া পৌরশহরের রাধানগরের নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক মো. আবুল কালাম চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘আখাউড়া পৌর শহরের রাধানগর মৌজার ২৯৩ দাগে বিএস ১৩১০ দাগে ক্রয়সূত্রে আমি সাড়ে ৪ শতক জমির মালিক। বিএস ২০৪ নম্বর চূড়ান্ত খতিয়ানে আমার নামে ভূমিটি লিপিবদ্ধ হয়। ক্রয়ের পর আমি উক্ত জায়গায় ভিট পাকা চারচালা টিনের ঘর নির্মাণ করি। ২০০১ সালের ২৪ জানুয়ারি আখাউড়া পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মো. নূরুল হক ভূইয়া ১৫০ টাকার দুটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ভাড়াটিয়া চুক্তি করে মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকায় আমার বাড়িটি ভাড়া নেয়। প্রথম দিকে পাঁচ-ছয় মাস ভাড়া পরিশোধ করে এরপর তালবাহানা করে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
দীর্ঘ দিন ভাড়া পরিশোধ না করায় ২০০২ সালে ভাড়া আদায় ও বাড়ি ছাড়ার বিষয়ে একটি সালিস হয়। কিন্তু সালিসের রায় অনুযায়ী সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূইয়া আমার পাওনা বকেয়া ভাড়া পরিশোধ না করে নানা তালবাহানা করে বাড়িটি জবর দখল করে রাখে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে আমার কোটি টাকা মূল্যের বাড়িটি মো. আবুল কালাম চৌধুরী জোর করে দখল করে রেখেছেন। বাড়িটি ছাড়ার জন্য বারবার তাকে তাগদা দিলেও তিনি ব্যক্তিগত বাহিনী ও দলের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।’
মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘আমি একজন বৃদ্ধ মানুষ। আমার পাঁচ ছেলে-মেয়ে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এক প্রতিবন্ধী ছেলে অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। বর্তমানে অর্থের অভাবে সংসারের ভরন পোষণসহ প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের চিকিৎসা খরচ চালাতে পারছি না।’
তিনি তার বাড়িটি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. নূরুল হক ভূইয়া বলেন, ‘মো. কালাম চৌধুরীর কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলাম সত্য। পরবর্তীতে জায়গাটি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি জানার পর আমি জেলা পরিষদ থেকে এ জায়গাটি বন্দোবস্ত (লীজ) নিয়েছি। লিজ মূলে আমি এখন বাড়িতে বসবাস করছি।’