মাধবপুর হাসপাতালে ৪ মাস ধরে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ

0

মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে গত ৪ মাস যাবৎ হাসপাতালে সরকারি ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে করে গ্রামাঞ্চল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক রোগী সরকারি ঔষধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে প্যারাসিটামল মেট্রোনিডাজল ও কলেরা স্যালাইন পর্যন্ত সরবরাহও নেই।

গত ৩১ অক্টোবর উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঔষধ সংকটের বিষয়টি উপস্থাপন করলে উপজেলা থেকে ৩ নভেম্বর ১৬ হাজার ৫শ প্যারাসিটামল, ১৪৪টি ৫০০ এম এলক কলেরা স্যালাইন ও ১৪৪টি ১০০০ এম এল কলেরা স্যালাইন সরবরাহ করা হয়। এগুলো এখন শেষ পর্যায়ে।

এদিকে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ও ভাটি অঞ্চলে পানি নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়া রোগ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই ডায়রিয়া চিকিৎসা নিতে এ হাসপাতালে রোগীর ভীড় দেখা দিয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে রোগীদেরকে ঔষধ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালে ঔষধের স্টোরটি বর্তমানে ঔষধ শূন্য। কবে নাগাদ ঔষধ সরবরাহ করা হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

ঔষধ অধিদফতর কর্তৃক জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে ঔষধ সরবরাহ হবে এ সিদ্ধান্তহীনতার কারনে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৪ মাস যাবত ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যে কারনে প্যারাসিটামল, কলেরা সেলাইন সহ জীবন রক্ষাকারি ঔষধ একেবারেই নেই।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, রোগীদের ভোগান্তির নানা চিত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক জানান, হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে কোন ধরনের ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লেখা যাবে না। কারণ ঔষধ নেই। এ জন্য ডাক্তাররা ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ লিখে বাহির থেকে ঔষধ সরবরাহের পরামর্শ দিচ্ছেন।

গোয়ালনগর গ্রামের একজন জানান, তিনি ডাক্তার দেখিয়েছেন কিন্তু তার যে সমস্যা সেই রোগের ঔষধ হাসপাতালে নেই।

গ্রামের এক গরিব রোগী জানান, এতদূর থেকে গাড়ি ভাড়া দিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু সরকারি ঔষধ না পেয়ে আমি হতাশ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এইচএম ইশতিয়াক মামুন যুগান্তরকে বলেন, প্রতিদিন এ হাসপাতালে আউটডোর ও ইনডোরে ৬ থেকে ৭ শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু লাস্ট কোয়াটার (তিন মাস) যাবত হাসপাতালে ঔষধ সরবরাহ নেই। এতে করে স্টক শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় রোগীদের কে সরকারি ঔষধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি জানান, মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঔষধ সংকটের বিষয়টি নিরসনের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিভাগীয় ডিরেক্টর ও সিভিল সার্জন কে অবগত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমাদের এখানে জুলাইয়ের পর কোনো ঔষধ সরবরাহ করা হয়নি। এর কারণে মূলত ঔষধের এ সংকটটি তৈরি হয়েছে। এটা শুধু হবিগঞ্জেই নয়, সারা দেশের একই অবস্থা। ঔষধ অধিদপ্তর কর্তৃক জেলা না উপজেলা পর্যায়ে ঔষধ সরবরাহ হবে নাকি সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা হবে এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা রয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com