অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখায় এরফান সেলিমের ১ বছরের জেল

0

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছর করে জেল দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি জানান, অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ছয় মাস ও অবৈধ মাদক রাখার দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে দুজনকে।

এর আগে দুপুরে এরফান সেলিমের বাসায় অভিযান শুরু করে র‍্যাব। অভিযানে ৩৮টি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ভিপিএস সেট, অস্ত্রসহ একটি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ড্রোন এবং সাত বোতল বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এরফান সেলিম জানিয়েছেন, এসব ওয়াকিটকির মাধ্যমে তিনি তার বাসার আশপাশের পাঁচ থেকে ১২ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা নেতাকর্মী ও অনুসারীদের সাথে কথাবার্তা এবং যোগাযোগ রাখতেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, উদ্ধার ভিপিএস সেটগুলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডিটেক করতে পারত না। তার বাসার চার ও পাঁচতলার কন্ট্রোল রুম থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, এসব অস্ত্র ও হ্যান্ডকাফের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এরফান সেলিম। আমাদের ধারণা এগুলো দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন। তার অস্ত্র দুটির কোনো লাইসেন্স ছিল না।

রোববার রাতে এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও আজ (সোমবার) ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘এরফানের গাড়ি ওয়াসিফকে ধাক্কা মারার পর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনি মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশ্যে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার।

সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে এরফান সেলিমকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এদিকে হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com