আগস্টে সড়কে ৪৫৯ প্রাণহানি, আহত ৬১৪
গেল আগস্ট মাসে সারা দেশে ৩৮৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৬১৪ জন। এরমধ্যে ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বুধবার (১৬ আগস্ট) সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
এছাড়াও আগস্টে ৪১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৮০ জন এবং ১৫টি রেল দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জন নিহত এবং ৬৬৯ জন আহত হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে এবং ৪৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে ঘটেছে। ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২ দশমিক ০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
আগস্টে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ বাস, ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকে, ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৪ আগস্ট। এদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ৪৬ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৯ আগস্ট ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ৩ জন আহত হয়।
মোট দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৮৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ খাদে পড়ে, ৪ দশমিক
৮৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০ দশমিক ২৫ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০ দশমিক ২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাড়াঁচ্ছে। এছাড়াও সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহীতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে।
উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যতিরেখে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।