করোনা মোকাবিলায় এত দুর্নীতি অন্য কোনো দেশে হয়নি: ইফতেখারুজ্জামান
ফরিদপুরের গ্রেপ্তার হওয়া দুই ভাই সাত বছরে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। তাঁদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। বৈধ কাঠামোর মধ্যেই তো এসব হয়েছে, জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে, ব্যাংকে লেনদেন চলেছে। দিনের পর দিন এটা কীভাবে চলল?
ইফতেখারুজ্জামান: দুই ধরনের দুর্নীতি হয়। একটা সরাসরি দুর্নীতি, যেমন ঘুষ নেওয়া। আরেকটা যোগসাজশের দুর্নীতি, এতে সব পক্ষই লাভবান হয়। ফরিদপুরের যে দুর্নীতির কথা বললেন, এটা যোগসাজশের দুর্নীতি। দুই ভাই অবৈধভাবে সম্পদের মালিক হয়েছেন, জমি দখল করেছেন, নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন। এই কাজটি মিলেমিশে হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন—সবাই এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন। এসব অপকর্ম নজরের বাইরে থাকবে বা রাখা হবে এটাই স্বাভাবিক। দুই ভাইয়ের এই ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যৌথ ও মিলেমিশে যে দুর্নীতি ঘটে, এটা তার বহিঃপ্রকাশ।
আপনি বললেন এ ধরনের দুর্নীতি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, কিন্তু ধরা পড়ার ঘটনাগুলো তো খুবই বিচ্ছিন্ন। হঠাৎ হঠাৎ কিছু ঘটনা প্রকাশ পায়। এর আগে আমরা ক্যাসিনো-কাণ্ড দেখলাম। পুলিশ ও প্রশাসনের নাকের ডগায় শহরের বিভিন্ন স্থানে ক্যাসিনো চলছিল।
ইফতেখারুজ্জামান: ধরা পড়ার ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন। কারণ, তাঁরা প্রভাবশালীদের সহায়তায় এসব অপকর্মে যুক্ত থাকেন। কেউ কেউ জানলেও ভয়ে প্রকাশ করতে পারেন না। আমাদের বর্তমান ব্যবস্থা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যতটা তৎপর, তার চেয়ে বেশি তৎপর দুর্নীতির খবর যেন প্রকাশিত না হয় সে ব্যাপারে। আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সেটা তারা পালন করছে না। তারা নানা হিসাব-নিকাশ করে চলে।
কিন্তু রূপপুরের বালিশকাণ্ড থেকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেনাকাটা, সাংসদ মহীউদ্দীন খান আলমগীরের অন্যের ঋণের টাকায় হাসপাতাল কেনা, পি কে হালদারের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া—এসব দুর্নীতির খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান: দুর্নীতির যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা হিমশৈলীর চূড়ামাত্র। আসলে একধরনের ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বলুন বা ব্যক্তি বলুন, সবার মাথার ওপর ঝুলছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো খড়্গ। নানা কৌশলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিসরকে সংকুচিত করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের পক্ষে যথাযথ ভূমিকা পালন করা কঠিন। আর যেসব সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে কতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেটাও এক বড় প্রশ্ন। বড় বড় ও প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজেরা শাস্তি পাচ্ছেন এমন দৃষ্টান্ত কম।
দুদক বেসিক ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনার তদন্ত করছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে ব্যাংকটির সে সময়ের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর নাম সব মহলে আলোচিত, কিন্তু দুদক যে মামলা করেছে, সেখানে তাঁর নাম নেই। দুদকের এই আচরণের ব্যাখ্যা কী?
ইফতেখারুজ্জামান: বেসিক ব্যাংকের ঘটনা অনেকের কাছে এক রহস্যময় গোলকধাঁধার মতো। সংসদে আবদুল হাই ও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রীদের মুখেও তাঁর অনিয়মের কথা শোনা গেছে। কিন্তু তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। আমার কাছে অবশ্য বিষয়টি পরিষ্কার। বেসিক ব্যাংক দুর্নীতিতে এত টাকা লোপাট হয়েছে যে বিভিন্ন পর্যায়ে টাকা দিয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কিছু নয়। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। দুদকের নেতৃত্বের সাহসের ঘাটতি আছে। তারা নিজেদের একটা সীমারেখা ঠিক করে নিয়েছে এবং তারা এরপর আর যেতে চায় না। তদন্ত করতে গিয়ে প্রভাবশালী কারও নাম বের হয়ে আসে কি না, সেই ভয়ে তারা ভীত থাকে।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবি বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রেও রিজেন্ট, জেকেজি বা মাস্ক-পিপিই নিয়ে যে যে ধরনের দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলো, তা দেশবাসীকে হতভম্ব করেছে। আপনার মন্তব্য কী?
ইফতেখারুজ্জামান: করোনা সংকটের স্বাস্থ্য খাত এখন চাপের মুখে। তাই এই খাতের নানা দুর্নীতি আর অনিয়মের খবর আমরা জানতে পারছি। একই ধরনের পরীক্ষার মুখে পড়লে অন্য খাতগুলোর অবস্থাও কমবেশি একই রকম হতো। তবে করোনা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো এত ব্যাপক ও গভীর দুর্নীতি অন্য কোনো দেশে হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত মেলেনি। কোভিড টেস্ট জালিয়াতির কারণে কোনো দেশের নাগরিকদের জন্য অন্য কোনো দেশ ফ্লাইট বন্ধ করেছে বা যাত্রী ফেরত পাঠিয়েছে, এমন নজির নেই।
টিআইর সূচক অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম ধারাবাহিকভাবে আসছে। বাংলাদেশের দুর্নীতির কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে কি?
ইফতেখারুজ্জামান: বিশ্বে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে দুর্নীতি হয় না। বাংলাদেশের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এখানে দুর্নীতির গভীরতা ও ব্যাপকতা দুটোই প্রবল। দুর্নীতি এখানে জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। টিআইবির সর্বশেষ জাতীয় খানা জরিপ অনুযায়ী, যাঁরা সেবা খাতে নিয়মিত ঘুষ দিতে বাধ্য হন, তাঁদের ৮৯ শতাংশ মনে করেন, ঘুষ ছাড়া তাঁদের ন্যায্য সরকারি সেবা পাবেন না, যা বৈশ্বিক বিবেচনায় সত্যি বিরল। একই সঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদক কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করছে না। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও স্ব আরোপিত সীমাবদ্ধতার কথা আগেই বলেছি।
অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হলো বৈপরীত্য। শীর্ষ পর্যায়ে সরকারি ও রাজনৈতিক অবস্থান থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতাসহ কঠোর অবস্থানের কথা শোনা যায়। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয় না।
বাংলাদেশে আপনারা বহু বছর ধরে কাজ করছেন। দুর্নীতি যদি না-ই কমল, তা হলে আপনারা কী ভূমিকা পালন করলেন?
ইফতেখারুজ্জামান: দুর্নীতি কমানোর দায়িত্ব বা এখতিয়ার টিআইবির নয়। এই দায়িত্ব বা এখতিয়ার সরকারের, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচারপ্রক্রিয়ার এবং বিশেষ করে দুদকের। তাদের নির্ধারিত ভূমিকা তারা যেন সঠিক ও কার্যকরভাবে পালন করতে পারে, তার জন্য চাহিদা তৈরি, তা জোরদার করার দায়িত্ব ও এখতিয়ার টিআইবির। এই ভূমিকা আমরা সক্রিয়ভাবে এবং সাফল্যের সঙ্গে পালন করে যাচ্ছি। আমাদের বহুমুখী গবেষণা, প্রচারণা ও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমের ফলে মানুষের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী চাহিদা বেড়েছে, রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে দুর্নীতিবিরোধী ঘোষণা আসে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইনি ও নীতি সংস্কার হয়েছে। যে দুদকের কথা বলা হলো, তার জন্ম হয়েছে টিআইবির চাহিদার ও কারিগরি সহায়তার পরিপ্রেক্ষিতে। এই তালিকা আরও অনেক দীর্ঘ। তবে মানতেই হবে মূল সমস্যা হচ্ছে এসব প্রয়োগের ক্ষেত্রে ঘাটতি।
দুর্নীতি দমনে দুদকের শক্তি-সামর্থ্য, সক্ষমতা বা সদিচ্ছা এখন কোথায় এসে ঠেকেছে বলে মনে করেন?
ইফতেখারুজ্জামান: আমরা ২০১৭ ও ২০১৯ পরপর দুবার সুনির্দিষ্ট গবেষণা করে দুদককে দেখিয়েছি যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় মাপকাঠিতে বাংলাদেশে কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের সম্ভাব্য সামর্থ্য তাদের রয়েছে, যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও কিছু সংস্কার প্রয়োজন আছে। ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থানের ঊর্ধ্বে উঠে দুদক দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে এমন দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে। দুদক সম্ভবত নিজেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করে এবং সে জন্য সরকার বা ক্ষমতাবান কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারেন, এমন কিছু করার সাহস তারা করে না। তা ছাড়া দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের অদক্ষতা, অসদাচরণ ও দুর্নীতিও কারও অজানা নয়।
দেশের অর্থনীতি ও সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বাড়ছে। বেসরকারি খাতের দুর্নীতি নিয়ে আপনারা কাজ করছেন না কেন?
ইফতেখারুজ্জামান: বেসরকারি খাত নিয়ে আমাদের কাজ তুলনামূলকভাবে কম ঠিকই, তবে একেবারেই কিছু করছি না তা নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তৈরি পোশাক, দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিভিন্ন বেসরকারি খাত আমাদের অ্যাজেন্ডায় ইতিমধ্যে এসেছে, আরও আসছে। তবে সরকারি খাতে বিশেষ করে রাঘববোয়ালের দুর্নীতির যে ত্রিমুখী আঁতাত, তার দুটি মুখই তো বেসরকারি খাত। এক. সরকারি ক্রয়ের ঠিকাদার হিসেবে আর দুই. রাষ্ট্রকাঠামো দখলকারী রাজনীতিক নামধারী ব্যবসায়ী হিসেবে। সংসদ সদস্যদের ৬২ শতাংশই তো ব্যবসায়ী। তাই দুর্নীতিবিষয়ক কাজকে ব্যবসা খাতের দুর্নীতির ওপর কাজ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। আর লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতও টিআইবির ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় পিছিয়ে নেই।
উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বা এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করে। এই সংস্থাগুলোর মাধ্যমে যে প্রকল্প চলে, সেখানে দুর্নীতি বা এতে এসব সংস্থার কোনো ভূমিকার অভিযোগ আপনাদের কাছে রয়েছে কি?
ইফতেখারুজ্জামান: উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর দুর্নীতিবিরোধী জোরালো ঘোষণা লক্ষ্য করা যায়। তবে কাগজে-কলমে এই প্রচারণা যতটা জোরালো, চর্চার ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন দেখা যায় না; বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগসাজশে, অবহেলায় বা তদারকির ঘাটতির কারণে দুর্নীতি হচ্ছে এবং তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমাদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাস্তবায়ন হচ্ছে এমন অন্তত একটি বড় প্রকল্পে বহুমুখী দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে অবাস্তব মূল্যে এবং সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা ছাড়াই ক্রয় ও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক তা প্রতিরোধে কোনো ভূমিকা রেখেছে এমন কোনো তথ্য নেই। অথচ পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে শুধু ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প থেকে বিতর্কিতভাবে সরে গিয়ে নিজেই শেষ পর্যন্ত নাজেহাল হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকেরই স্ববিরোধী আচরণের শেষ নেই।
সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে মানব পাচারের অভিযোগে সেখানে গ্রেপ্তার হয়েছেন। রাজনৈতিক অনিয়ম দুর্নীতি বিস্তারে কতটা ভূমিকা পালন করে? বিশেষ করে সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলো নিয়েও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে।
ইফতেখারুজ্জামান: রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের অন্যতম মাধ্যম আর এর মৌলিক অনুঘটক নির্বাচনী অনিয়ম। নির্বাচনী অনিয়মে রাষ্ট্রযন্ত্র, বিশেষ করে আমাদের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার অপব্যবহার, এমনকি কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজেকে অপব্যবহারের যে সুযোগ করে দিয়েছে, তা সত্যিই বিরল।
বাংলাদেশে দুর্নীতি কমবে—এমন আশা যদি আপনাকে করতে বলি সেখানে আপনি কতভাগ আশাবাদী?
ইফতেখারুজ্জামান: অনেক ঘাটতি ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমি আশাবাদী। আশাবাদী না হলে বাংলাদেশে এ ধরনের কাজ করা যায় না। আমার আশাবাদী হওয়ার একাধিক কারণের একটি হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের চালিকা শক্তি হিসেবে যারা গড়ে উঠতে যাচ্ছে। আর দুর্নীতিবিরোধী এই সামাজিক আন্দোলনের ডাক দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু, বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্নভাবে। তবে বিশেষ করে ১৯৭৫-এর স্বাধীনতা দিবসে দেওয়া এক ভাষণে তিনি একাত্তরে যেমন ঘরে ঘরে স্বাধীনতার দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তেমনি সেদিন তিনি প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুর্গ গড়ার আহ্বান জানিয়ে গেছেন। আজ মুজিব বর্ষে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে আশাবাদী হয়েই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। সরকারও যদি মুজিব বর্ষে তাঁর প্রতি সত্যিকার ও পরিপূর্ণ সম্মান জানাতে চায়, তাহলে দুর্নীতিবিরোধী প্রত্যয়কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার এখনই সময়।