বর্ণবাদই জয়-পরাজয়ের চাবি!
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই মাস। এখনো যেকোনো কিছু ঘটে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। জরিপে এখন পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে কী ঘটে তাই দেখার বিষয়। তবে দেশটির নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে অতীতের যেকোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় এবার বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে বলে পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে বলা হচ্ছে।
সম্প্রতি করা পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৭১ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার অতীতের ঐতিহাসিক ত্রুটিগুলো শোধরাতে চায়। বাইডেন সমর্থকদের ৮৭ শতাংশ ভোটারও একই মত পোষণ করেন। তবে ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ রিপাবলিকান মনে করেন, অতীত নিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও দুর্বল করে দেবে। আর আমেরিকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ৬৬ শতাংশ ট্রাম্প সমর্থক মনে করেন, দীর্ঘস্থায়ী নীতি একটি সফল দেশ হতে সাহায্য করে। একই বক্তব্য সমর্থন করে বাইডেনের ৬৮ শতাংশ সমর্থক। ফলে এবারের নির্বাচনে কোন নীতির পরাজয় বা জয় হবে তা বলা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।
পিউ বলছে, নির্বাচনী প্রচারের এ দুই মাস উভয় দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকানরা জানেন যে, ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অনেক কিছুই পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের অতীতও অতটা ভালো নয় যে, তাদের পক্ষে জনসমর্থনের ঢেউ বইবে। বিল ক্লিনটন বা বারাক ওবামার আমলে ডেমোক্র্যাটদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির অর্ধেকও পূরণ করা হয়নি।
মূলত অতীতের ঐতিহাসিক ত্রুটি বলতে কৃষ্ণাঙ্গ ও দাস ব্যবস্থাকেই ধরা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দিকের প্রেসিডেন্টদের কয়েকজন দাস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি বর্তমানেও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি সমালোচিত হওয়ায় অতীতের বর্ণবাদী বৈষম্যের বিষয়টি নির্বাচনের আগে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাট শিবির অতীতের ত্রুটিকে ট্রাম্পকে হারাতে ব্যবহার করতে চাইছে। আর রিপাবলিকান শিবির অতীতকে ভুলে গিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছে।
সম্প্রতি উইসকনসিনসহ বেশ কয়েকটি শহরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনায় ব্যাকফুটে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন আমেরিকানরা যদি অতীতের ত্রুটি শোধরাতে যায় তাহলে রিপাবলিকানরা এবার মসনদচ্যুত হতে পারে। আর শোধরাতে না চাইলে ট্রাম্পই দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। সবকিছু নির্ভর করছে আমেরিকানদের অতীত বিশ্লেষণের ওপর।