ইসলামি জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা ও গুরুত্ব

0

জ্ঞান অর্জনই মানুষের মর্যাদার পার্থক্য নির্ণয় করে দেয়। এ জ্ঞানের মর্যাদা দিতে গিয়েই আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের উপর হজরত আদম আলাইহিস সালামের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাকে সেজদা করতে বলেছেন। জ্ঞান অর্জনের প্রাধান্য দেয়ার এ বিষয়টি ছিল মহান আল্লাহর একটি কুদরত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া কোনো মানুষ দেখতে চায়, সে যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের জ্ঞান অর্জনকারী ব্যক্তির দিকে তাকায়। তিনি শপথ করেন বলেন-
‘কোনো আলেমের দরজায় যখন কোনো জ্ঞান অন্বেষণকারী দ্বীন শিখতে যায়, তখন তার প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময় এময় বছরের ইবাদতের সাওয়াব লেখা হয়। জান্নাতে তার জন্য একটি শহর তৈরি করা হয়। সে যখন জমিনে বিচরণ করে, জমিন তার জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। আর তার উপর এমন অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যা হয় যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। আর ফেরেশতারা সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, তারা দোজখ থেকে নাজাত পাওয়া দল।’

হাদিস ও তাফসিরে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের অসাধারণ মর্যাদা ও গুরুত্বের কথা ওঠে এসেছে। দ্বীনি জ্ঞান অর্জনকারী ব্যক্তিকে সুস্পষ্ট জান্নাতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। তাফসিরে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের অসাধারণ ৫ উপকারিতার কথাও ওঠে এসেছে।

দ্বীনি ইলম অর্জনের গুরুত্ব
দ্বীনি জ্ঞান না থাকলে আল্লাহকে ভয় করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হয় মানুষ। আল্লাহর ভয়ই মানুষকে নেক কাজের দিকে ধাবিত করে। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে কুরআন তাদের জন্যই পথপ্রদর্শক। ইমাম রাজি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দ্বীনি ইলমে বৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করেছেন। এর মাধ্যমে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের ৫টি অসাধারণ মর্যাদা তুলে ধরেছেন। তাহলো-
– বৃষ্টি যেমন আসমান থেকে নাজিল হয় তেমনি দ্বীনি ইলমও আসমান থেকে নাজিল হয়।
– দ্বীনি ইলম বৃষ্টির ন্যায়। বৃষ্টির কারণে জমিন যেভাবে ফসল উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়। তেমনি দ্বীনি ইলম অর্জনের কারণেই মানুষের সব নৈতিক ও মানবিক গুণগুলো অর্জিত হয়।
– বৃষ্টি ব্যতিত যেমন জমিন থেকে ভালো ফসল উৎপন্ন হয় না, ঠিক দ্বীনি জ্ঞান ব্যতিত মানুষও আল্লাহ তাআলার ইবাদাত-বন্দেগি করতে সক্ষম হয় না।
– বজ্র ধ্বনি বা বিদ্যুৎ চমকানোর ফলে যেমন বৃষ্টি হয়; তেমনি দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই মানুষ জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পায়।
– বৃষ্টি যেমন অনেক সময় উপকারী হয় আবার অপকারী হয়, ঠিক দ্বীনি জ্ঞান অনুযায়ী আমল করার মধ্যে যেমন উপকার হয় তেমনি আমল না করলে তা অপকারীও হয়।’ (তাফসিরে কবির)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা। হাদিস ও তাফসিরের ঘোষণা অনুযায়ী দ্বীনি জ্ঞান শেখার প্রতি যথাযথ আগ্রহ ও প্রচেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহসহ সবাইকে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের তাওফিক দান করুন। দুনিযা ও পরকালের কল্যাণ লাভে জ্ঞান অর্জনের প্রতি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com